বিরোধপূর্ণ অঞ্চল জাপোরিঝিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র নিযে ‘পাগলা আতঙ্ক’ সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এক ইউক্রেনিয়ান কর্মকর্তা। কিয়েভ আক্রমণ চালাতে পারে এই ভয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের একেবারে কাছের ইনারহোডারসহ জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের ১৮টি সেটেলমেন্ট থেকে লোকজনকে দ্রুত সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া।
রোববার ৭ মে বিবিসির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদন অনুযায়ী জাপোরিঝিয়া অঞ্চল থেকে হাজার হাজার গাড়িতে এসব মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের মেলিটোপোলের মেয়র ইভান ফেডোরভ বলেন, পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর এসব মানুষকে নিয়ে গাড়িগুলো ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে। এছাড়াও এমন অবস্থায় ওই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে’ বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)।
এ সংস্থার পরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থা ক্রমশ এমন অবস্থায় যাচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিত এবং ভয়াবহ বিপজ্জনক। এ নিয়ে আইএইএ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এখনও ওই স্থাপনায় অবস্থান করছেন অপারেটিং স্টাফরা। ফলে এই স্থাপনা নিয়ে ক্রমেই উত্তেজনা, হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সেখানে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরকে নিয়ে এবং তাদের পরিবারকে নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ। আইএইএ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে যেসব তথ্য পাচ্ছেন তাতে বলা হয়েছে, ইনারহোডারসহ আশপাশের এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এই ইনারহোডারেই বসবাস করেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশিরভাগ স্টাফ।
ওই অঞ্চলে ক্ষমতায় রাশিয়া প্রতিষ্ঠিত সরকারপ্রধান ইয়েভগেনি বালিতস্কি বলেছেন, কয়েকদিন ধরে শত্রুপক্ষ ফ্রন্টলাইনের খুব কাছে বসতিতে গোলা নিক্ষেপ বৃদ্ধি করেছে। তাই আমি লোকজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথমে সব শিশু এবং তাদের পিতামাতাকে, প্রবীণ ব্যক্তিদের, চলাচলে অক্ষম ব্যক্তিদের এবং হাসপাতালে থাকা রোগিদের উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কতা দিয়েছে আইএইএ। গত বছর আগ্রাসন চালানোর কয়েকদিনের মধ্যেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দখলে নেয় রাশিয়া। তার আগে গোলা নিক্ষেপের ফলে অস্থায়ীভাবে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।