কানাডার হ্যালিফ্যাক্সে ‘বাংলাদেশী এ্সোসিয়েশান অব নোভা স্কসিয়া’ (বিডিক্যান্স) এর উদ্যোগে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
এসময় অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ।
অনুষ্ঠানে আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভাষা আন্দোলনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী, অস্থায়ী শহীদ বেদীতে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ, আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি, শিশুদের এবং বড়দের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাষা মেলা আয়োজিত হয়। বিভিন্ন ভাষাভাষীদের স্টল ঘুরে উপস্থিত সবাই বিভিন্ন ভাষার সাথে পরিচিত হয়। তাদের ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে জানে। তাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে অবগত হয়। সবচেয়ে গৌরবময় ছিল বাংলা ভাষার স্টল। এখানে বিভিন্ন দেশের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য সম্পর্কে জেনে অনেক বিদেশী-বিদেশিনীরা হতবাক হয়ে পড়েন।
নোভা স্কসিয়ার লেফটেন্যান্ট গভর্নর ‘মান্যবর আর্থার জে. লেব্লাঙ্ক’ ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, বাঙালির রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে।
অনুষ্ঠানে মাহবুবুল আলম এর লেখা কবিতা ‘আমি বিচার চাইতে এসেছি’ আবৃতি করেন মাহবুবুর রহমান। আবৃতির সময় উপস্থিত সবাই ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ উপলদ্ধি করে। অনুষ্ঠানে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ এর ‘কোন এক মাকে’ কবিতাটা আবৃতি করেন আবজাল হোসাইন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিশু কিশোরদের পরিবেশনায় সকলকেই অভিভুত। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন দীপন্বীতা দে, সৈকত ও নবনীতা, জুলেখা নুসরাত এবং আরিয়ান।
এসময় বিডিক্যান্স এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র ‘স্পিকিং হোম’ দেখানো হয় অনুষ্ঠানে।
পৃথিবীর সকল জাতি ও মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন স্বরুপ মিকম্যাক অধিবাসীদের আবাস-স্বীকৃতি দেয়া হয় বিডিক্যান্স এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে। এরপর বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য শহীদ মিনারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। উপস্থিত সকলেই বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ‘জাস্টিন ট্রুডো’ উক্ত অনুষ্ঠান উদযাপন উপলক্ষে বিডিক্যান্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি অভিনন্দন পত্র প্রেরণ করেন।