কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বড় বোনকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাড়িঘরে হামলা করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। অভিযুক্ত হলেন, একই এলাকার মো. মামুন মিয়া (১৯), মো. রাব্বি মিয়া (১৮) সিয়াম মিয়া (১৮)সহ অজ্ঞাত আট থেকে দশ জনের একদিল কিশোর দল।
মঙ্গলবার ২৮ মার্চ সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের দক্ষিণ কুড়িমারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ৯৯৯ কল করা হলেও ঘটনাস্থলে আসেনি থানা পুলিশ।
থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইউনিয়নের দক্ষিণ কুড়িমারা (মাঝি বাড়ি) এলাকার খুর্শিদ উদ্দিনের ডিগ্রী প্রথম বর্ষে পড়ুয়া মেয়েকে একই এলাকার মো. মামুন মিয়া, মো. রাব্বি মিয়া ও সিয়াম মিয়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে আসছিল। এসব ঘটনা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ওই কলেজ ছাত্রীকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়া ধর্ষণের হুমকি দেয়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দিনরাত ওই ছাত্রীর বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করে তার নাম ধরে ডাকাডাকি ও অশালীন কথাবার্তা বলতো।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই ছাত্রী ঘরে পড়তে বসেলে কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা ঘরের পিছন থেকে নাম ধরে ডাকাডাকি ও অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর ছোট ভাই প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিট করতে থাকে। এসময় ওই ছাত্রী তার ভাইকে বাঁচতে এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিট করে ও হয়রানি করে। তাদের চিৎকারে তার বড় বোন এগিয়ে আসলে বখাটে সিয়াম মিয়া তাকে লাঠিপেটা করে এবং মাথার চুল ও পরনের কাপড় ধরে টানা হেছড়া করে তাকেও হয়রানি করে। এসময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাদেরকে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
আধাঘণ্টা পড়ে মো. মামুন মিয়া, মো. রাব্বি মিয়া ও সিয়াম মিয়া আট থেকে দশ জন নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে রামদা, চাপাতি, সুইচ গিয়ার, চাইনিস কুড়াল, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ওই ছাত্রীকে ও তার বড় বোনকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তারা ঘরের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে গেলে বসত ঘরের টিনের বেড়া, দরজা, জানালা কুপাইয়া ভাংচুর করে। যার আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪০ হাজার টাকা। ভুক্তভোগীদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিলে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় ওই কলেজ ছাত্রী বাদি হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের পিতা খুর্শিদ উদ্দিন জানান, ওই বখাটের দল নেশাগ্রস্থ। তারা বেশকিছুদিন ধরে তার মেয়েদের উত্যক্ত করে। দক্ষিণ কুড়িমারা গ্রামের আঙ্গুরের ছেলে মামুন (১৬), ভরুয়া গ্রামের কুদ্দুছের ছেলে আলামিন (১৫) একই গ্রামের সিয়ামসহ আরও কয়েকজন। তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় জরুরি সেবা (৯৯৯) ও হোসেনপুর থানায় কল দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেনি। হোসেনপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আআসাদুজ্জামান টিটু জানান, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।