প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪টি অটোরিকশা ছিনতাইসহ ৯ মাসে শতাধিক রিকশা চুরি করেছে একটি চক্র। মূলহোতা শরীফুল ইসলাম যিনি একজন ক্যাভার্ডভ্যান চালক।
রাজধানীর রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকা থেকে চালককে অজ্ঞান করে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ছিনতাই ও চালক নিহতের ঘটনায় এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রামপুরা থানা পুলিশ।
গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে আপডাউন যাতায়াতের কথা বলে চালক শাহ আলম মিয়ার রিকশা ঠিক করে। পরে মাঝ পথে কৌশলে রিকশা ছিনতাই করে নিয়ে নেয় চক্রটি।
গ্রেপ্তাররা হলেন ছিনতাই চক্রের মূলহোতা মো. শরীফুল ইসলাম (৩২) ও তার অন্যতম সহযোগি চান্দু (৪০) এবং চোরাই রিকশা কেনা বাঁচার সঙ্গে জড়িত ফুল মিয়া (৫৯) ও মো. আল আমিন (৩৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি চোরাই রিকশা উদ্ধার করা হয়। গত ৪ মে রাজধানীল মুগদা মানিক নগর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম।
হায়াতুল ইসলাম বলেন, ঘুমের ঔষধ খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের মূলহোতা শরীফুল ইসলাম। তিনি পেশায় কাভার্ডভ্যান চালক। ৯ মাস আগে তিনি যে কাভার্ডভ্যান চালাতেন সেটি মালিক বিক্রি করে দেওয়ায় বেকার হয়ে যান। এরপর একজনের মাধ্যমে অটোরিকশা চুরি শেখেন। তারা প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪টি রিকশা ছিনতাই করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে রামপুরার বনশ্রী এলাকা থেকে নিহত অটোরিকশা চালক শাহা আলমের রিকশায় দুজন যাত্রী ওঠে। পথে তাকে অজ্ঞান করে রিকশাটি নিয়ে যায় চক্রটির সদস্যরা। শাহা আলামকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ এপ্রিল মারা যায় সেই। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে বনশ্রী ও খিলগাঁও এলাকার শতাধিক সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ এ বিশ্লেষণ করে অজ্ঞান পার্টির মূলহোতা শরীফুল ইসলাম তার সহযোগী চান্দু ও শাহাবুদ্দিনকে শনাক্ত করা হয়।
গতকাল শনিবার রাতে মুগদা থানার মানিক নগর এলাকা অভিযান চালিয়ে শরীফুল ও চান্দুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩২টি চেতনা নাশক ট্যাবলেট ও একটি অটো রিকশা উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই অটোরিকশা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ফুল মিয়া ও আল আমিনকে নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্দিরগঞ্জ থানার মিজমিজি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।তাদের কাছ থেকে সাতটি চোরাই অটো রিকশা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার শরীফুল প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে গত ৯ মাসে শতাধিক রিকশা চুরি করেছে। এমন কি শাহা আলামের রিকশা ছিনতাই করার পরেও অন্তত ৯টি অটো রিকশা ছিনতাই করেছে। এই সকল রিকশা তারা ফুল মিয়া ও অপর একটি চক্রের কাছে বিক্রি করত।