চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

পরিশ্রমই সফলতার চাবিকাঠি

ঐশী কালামের এক পরতে দৃষ্টিসীমা থেমে যায়, মহান প্রতিপালেক অমূল্য বাণী “যে জাতি নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যচক্র পরিবর্তন করে না, আল্লাহও তাদের ভাগ্যে পরিবর্তন আনেন না” [সুরা আর-রা‘দ, আয়াত : ১১]। আয়াতের সাবলীলত্ব প্রমাণ করে পরিশ্রমের কতটুকু মর্যাদা।

সফলতা লাভের একমাত্র উপায় পরিশ্রম। ব্যক্তি বা জাতির সফলতার পিছনে একমাত্র নিয়ামক হলো পরিশ্রম। মানুষ কোনো কাজে প্রথমবারেই সাফল নাও হতে পারে, দীর্ঘদিনের পরিশ্রম কিংবা নিরবিচ্ছিন্ন পরিশ্রমের ফলেই উঁকিঝুঁকি দেয় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। কোনো কাজে ব্যর্থ হলে তাতে হতাশ না হয়ে সেই কাজে কঠোর পরিশমের মনোনিবেশে আছে সফলতা।

মহামহিম আল্লাহ প্রদত্ত মানব জাতির জন্য এক অমূল্য শক্তি ও সম্পদের নাম হলো শ্রম। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশি উন্নত। মহাগ্রন্থ আল কুরআনে আল্লাহর ঘোষণা, “নিশ্চয়ই আমি মানুষকে শ্রমনির্ভর করে সৃষ্টি করেছি” [আল-কুরআন, সূরা বালাদ, আয়াত : ৪]।

রসুলে আকরাম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কথা, কাজ ও উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে শ্রম ও শ্রমিকদের প্রশংসা করেন। শ্রমকে ভালোবাসতেন স্বয়ং তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও। নিজ হাতে জুতা মুবারক মেরামত করেছেন। কাপড়ে লাগিয়েছেন তালি। মাঠে মেষ পালন করেছেন। পরিচালনা করেছেন ব্যবসাও। খন্দকের যুদ্ধে নিজ হাতে পরিখা খনন করেছেন। বাড়িতে আগত মুসাফির কর্তৃক বিছানায় ত্যাগকৃত মলযুক্ত কাপড় ধৌত করে মানবতা ও শ্রমের মর্যাদা সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। সায়্যিদুনা হযরত মিকদাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “কোনো ব্যক্তি তা থেকে উত্তম আহার করেনি, যা সে নিজ হাতে উপার্জন করে খেয়েছে। আল্লাহর নবী দাউদ আলাইহিস সালাম নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন” [সহিহ বুখারি, খ.১, পৃ.২৭৮, হাদিস নং-২০২৫]।

আল্লাহ তা‘আলা কাজের জন্য মানুষকে নামাজে পর বেরিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “অতপর তোমরা নামাজ শেষ করে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়। আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো এবং বেশি পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে সফলকাম হতে পার” [আল-কুরআন, সূরা জুমু‘আ, আয়াত : ১০]। আল্লাহর বাণী, “নিশ্চয়ই আমি মানুষকে কষ্ট ও পরিশ্রমনির্ভর করে সৃষ্টি করেছি” [সুরা আল-বালাদ, আয়াত ৪]।

মহান আল্লাহর এই বাণী প্রতিটি জ্ঞানীকে ভাবিয়ে তোলবে, তিনি আল কুরআনে বলেন, “নিশ্চয়ই পরকালের সাফল্যই মহাসাফল্য। আর এ সাফল্য অর্জনের জন্যেই সৎকর্মশীলদের আল্লাহর পথে প্রাণান্ত পরিশ্রম করা উচিত।” [সুরা আস-সাফফাত, আয়াত : ৬০।] কাজের জন্য মানুষকে নামাজে পর বেরিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “অতপর তোমরা নামাজ শেষ করে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়। আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো এবং বেশি পরিমাণে আল্লাহকে স্মরণ করো, যাতে সফলকাম হতে পার।” [আল-কুরআন, সূরা জুমু‘আ, আয়াত : ১০]।

তাই, পরিশ্রমের মাধ্যমেই আমাদেরকে সফলতা ধরা দেবে। পরিশেষে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কালোত্তীর্ণ বাণীর অনুরণন অনুরণন দেখি হাদিসে তিনি ঘোষণা করেন, “ঐ সত্ত্বার শপথ! যার হাতে আমার জীবন! তোমাদের কারও পক্ষে একগাছা রশি নিয়ে বের হওয়া এবং কাষ্ঠ সংগ্রহ করে পিঠে বোঝাই করে বয়ে এনে কোনো লোকের কাছে গিয়ে ভিক্ষা চাওয়ার চেয়ে উত্তম। অথচ সে ব্যক্তি তাকে দান করতেও পারে অথবা তাকে বিমুখও করতে পারে” [সহিহ বুখারি শরিফ, খ. ১, পৃ. ১৯৯, হাদিস নং–১৪৪৯]।