জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সারাদেশে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এরমধ্যে হঠাৎ করেই অনেক রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে যাত্রীরা।
রাঙ্গামাটি
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সকাল থেকে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ জেলার সব কয়টি অভ্যান্তরীণ সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম বাস মালিক সমিতি। সকাল থেকে আকস্মিক যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে পর্যটকসহ সব যাত্রী। একইসাথে বিপাকে পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
পূর্ব ঘোষণা ছাড়া তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে সকালে রাঙ্গামাটি অটোরিকশা ড্রাইভারের সাথে যাত্রীদের সাথে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় অটোরিকশা ড্রাইভাররা রাস্তায় নেমে আসে। ড্রাইভাররা রাস্তায় নেমে সব গাড়ির চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
অন্যদিকে শুক্রবার রাতে তেলের নতুন দাম কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে সবগুলো ফিলিং স্টেশনে তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়।ক্রেতাদের অভিযোগ, তেল মজুদ রেখে আজ সকাল থেকে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রি করছে তারা।
চাঁদপুর
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা শুনেই চাঁদপুরে পেট্রল পাম্পগুলোতে মোটরসাইকেল ও জ্বালানি গাড়ির ভিড় শুরু হয়। শুক্রবার রাত ১১টার পর গণমাধ্যমে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাঁদপুরের সকল পাম্পে যানবাহন চালকরা আসতে শুরু করেন। এরপর রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এই চাপ। তবে প্রতিটি পেট্রলপাম্প কর্তৃপক্ষ ১০০ টাকার বেশি জ্বালানি তেল দেননি। আবার অনেক পেট্রল পাম্প তেল শেষ বলে বন্ধ করে দেয়। এতে যানবাহন চালকরা ক্ষিপ্ত হয়ে অন্য পাম্পে চলে যায়।
হঠাৎ করে এমনভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ জনগণ।
অন্যদিকে রাত ১২টার পর নতুন দরে পাম্পগুলো থেকে বিভিন্ন যানবাহনকে জ্বালানি তেল নিতে দেখা গেছে।
লক্ষ্মীপুর
জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে লক্ষ্মীপুরে পাম্পগুলোতে যানবাহনের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। যানবাহনের দীর্ঘ লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে তেল না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সরকার কর্তৃক জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার পরপরই রাত সাড়ে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পূর্বের দামে তেল কেনার জন্য যানবাহনের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তেলের আশায় অপেক্ষা করতে থাকে। তবে তেল না পাওয়ায় অনেকে হতাশা পড়েছেন। রাত ১২টা এক মি. থেকে নতুন মূল্য কার্যকর শুরু হয়। তখন তেল না পেয়ে দেরী হওয়ায় বাস চালক ও মোটরসাইকেল চালকদের মাঝে হট্টগোল দেখা দেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এরমাঝে অনেক পাম্প মূল্য বৃদ্ধির খবর পেয়ে বিভিন্ন অজুহাতে তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয় বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেন। তবে শহরের উত্তর বাজার পুরনো পাম্পটি বিক্রি স্বাভাবিক রাখে। তবুও ভিড়ের কারণে অনেকে তেল সংগ্রহ করতে পারেনি। এতে মোটর সাইকেলের সবচেয়ে ভীড় লক্ষ্য করা যায়।
নোয়াখালী
রাত ১২ টা থেকে ডিজেল, পেট্রল ও অক্টেনের দাম বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার খবর পেয়ে কয়েকটি পাম্প ছাড়া জালানি তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয় নোয়াখালীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন।
এ সময় ভারি যানবাহনসহ বিভিন্ন বাইকাররা শহরের বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন ঘুরে তেল না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হতে থাকে। পরে মেসার্স এ এস এম জহিরুল ইসলাম ফিলিং স্টেশনে সামনে জড়ো হলে তারা তেল দেওয়া শুরু করে। কিন্তু পরিমাণে তেল কম বিক্রি করছে। এসময় সড়কের দুপাশে যানজট লেগে যায়। রাত ১১টা ৩০ এর দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে তেল বিক্রিতে বাধ্য হয় কয়েকটি পাম্প কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার কয়েকটি ফিলিং স্টেশন ছাড়া তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার খবর শুনে আগে থেকে বন্ধ করে দেয় ফিলিং স্টেশনগুলো।
পটুয়াখালী
জ্বালানী তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির খবরে রাতে পটুয়াখালীতে পেট্রোল পাম্প গুলোতে উপচে পড়া ভিড় জমে মোটরবাইকের। তেল বিক্রিতে নানা অজুহাত টালবাহানা দেখিয়ে গ্রাহকদের বিলম্ব করায় পাম্পের বিক্রয় কর্মীরা। এতে হৈহুল্লোরে অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হয় তেল বিতরণে। পুলিশি হস্তক্ষেপে কোন কোন পাম্পের কৃত্রিম সংকট নিরসন হলেও রাত ১২টার আগেই বেশ কিছু পাম্প ও পেট্রোল দোকান বন্ধ করে মালিক-কর্মচারীরা গা ঢাকা দেয়ায় বাইক ও যানবাহন চালকরা ভোগান্তিতে পড়ে।
সিরাজগঞ্জ
সারা দেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জেও তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে পাম্পে তেল নিতে আসা গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। সরকার ঘোষিত তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সিরাজগঞ্জের পাম্পগুলোতে রাতে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভীড় থাকলেও সকালে তা পুরোটাই স্বাভাবিক রয়েছে।
সরকার ঘোষিত তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে সিরাজগঞ্জের পাম্পগুলোতে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। ঘোষণার পরপরই পাম্পগুলো তেল বিক্রি বন্ধ করে দিলে পাম্পে তেল নিতে আসা গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় মিরপুর ফিলিং স্টেশন পাম্প ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পাম্পে তেল নিতে আসা গ্রাহকরা জানান, ১২ টার পর থেকে মূল্য কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও রাত ১০টা থেকে পাম্প তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় তারা বিপাকে পড়ে এবং অনেকে উত্তেজনা বসত পাম্প ভাঙচুর করে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে গ্রাহকদের মোটরসাইকেল প্রতি ২০০ টাকার তেল দেয়া হয়।