কিশোরগঞ্জে অপহরণের পর বন্ধুর হাতে ছাত্রলীগ নেতা খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজের ২৫ দিন পর গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে জেলার গুরুদয়াল কলেজ ওয়াচটাওয়ার সংলগ্ন নরসুন্দা নদী থেকে মোখলেছ উদ্দিন ভূইয়ার (২৮) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মোখলেছ জেলার মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোর ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।মোখলেছ কেওয়ারজোর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও মোখলেছ কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টে চুক্তিভিত্তিক পেশকারের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শহরের হারুয়া বউবাজার এলাকা থেকে নিহত মোখলেছুর নিখোঁজ হন। ১ এপ্রিল মোখলেছুরের পরিবার কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে পুলিশ নিখোঁজ মোখলেছকে খুঁজতে থাকেন। ১৬ এপ্রিল নিহতের স্বজনেরা একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরে পর থেকে টানা ৬ দিন অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত মামলার এক আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামীর দেয়া তথ্যমতে গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) ও আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় দু’দিন অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। পরে আজ বিকেলে তার মরদেহে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
নিহত মোখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়ার বড় ভাই আশরাফ আলী জানান, ৩ মাস ধরে মোখলেছ কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া বউ বাজার এলাকার চুন্নু মিয়ার বাসায় ভাড়ায় থাকতেন। গত ২৯ মার্চ ভাড়া বাসা থেকে আনুমানিক রাত ৯ টার দিকে নিঁখোজ হয়। তার সর্বশেষ অবস্থান রাস্তার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত হয়। এই সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে তার সাথে কয়েকজন বন্ধুকে দেখা যায়। তার ধারণা বন্ধুরা তাকে অপহরণ করে খুন করেছে। সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে পুলিশ মিঠামইনের কেওয়ারজোর ইউনিয়ন ফুলপুর গ্রামের শেফুল শেখ (৬৫) তার তিন ছেলে মিজান শেখ (২৮), মারজান শেখ (২৬) ও রায়হান শেখকে (২১) হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থেকে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে ডিবি ও পুলিশের একটি দল যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। পরে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মোখলেছকে হত্যা করে মরদেহে ইটের ব্লক বেঁধে নরসুন্দা নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে জানায়।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিহত মোখলেছ উদ্দিন মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোর ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিবেদিত একজন কর্মী ছিলেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। একজন ছাত্রলীগ নেতার এমন নৃশংস মৃত্যু আমাদের ব্যাথিত করেছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ছাত্রলীগ নেতা মোখলেস উদ্দিন ভূঁইয়াকে ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যার পর, দেহের সাথে ভারী বস্তু বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়া হয়। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে।