শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত বাংলা সিনেমা ‘চন্দ্রাবতী কথা’। তার আগে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি প্রদর্শনী হয়েছে। ছবিটি দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসাও পেয়েছে।
দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরেও পাচ্ছে দর্শকের সমান প্রশংসা। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন গ্রুপেও সিনেমাটি নিয়ে কথা বলছেন অনেকে। জেনে নিন কেন ‘চন্দ্রাবতী কথা’ সিনেমাটি অবশ্যই দেখা উচিত:
খাঁটি বাংলা সিনেমা: ‘চন্দ্রাবতী কথা’কে খাঁটি বাংলা সিনেমা বলে মনে করছেন অনেকেই। বিশেষ করে ‘শুনতে কি পাও!’ খ্যাত নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন সিনেমাটি দেখে বলেছেন, “স্থাপত্যে পড়ার সময় দেখেছি দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকেরা পশ্চিমা নকশার বাইরে আলাপ করতে পারেন না। ছবি বানাইতে আইসাও শুনলাম সেই পশ্চিমেরই জয়জয়কার… কলকাতা কি ইউরোপ, মগজ কিন্তু বন্দক থাকলো পশ্চিমেই! একটা দশক অগ্রজ আর অনুজেরা শুধু ইরানিয়ান, কোরিয়ান আর লাতিন ছবি নিয়াই কথা বললাম, আমাদের গল্প তেমন একটা শুনলাম না; আমাদের ভাষা- সেতো দুরাশা! এমনকি পোস্ট-৭১ প্রজন্মের উত্তর-ঔপনিবেশিক সমাজ বা ইউরোসেন্ট্রিক টেক্সট কারিকুলামের বাইরে খোড়াখুড়ির অতি সাম্প্রতিক সামান্য যে চেষ্টা সেইটাও নির্দিষ্ট বৃত্তের ভিতর সীমিত, জনপরিসরেতো দূরের কথা – শিল্প-সাহিত্যের আর পাচটা অঙ্গনেও সেই চর্চা বিরল। কিন্তু রাশেদ ভাই আপনার ছবিটা দেখার পর থেকে কথাটা ভাবতেসি… শ্লেটের মতো আকাশ, নিচে অথৈ কালো পানি, ভাবের জমিনদারী, আর আসমানদারী! নিজে যতদিন নির্মাণে আছি, ততদিন অন্তত অন্য ছবি নিয়া লিখবো না ভাবছিলাম, ঠিক হবে না, তাই। কিন্তু আহা, ‘চন্দ্রাবতী কথা’! সময় কম তাই ছোট করে লিখলাম, ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে বিস্তারিত লিখবো এই নিয়া যে, ‘চন্দ্রাবতীর কথা’ আমাদের চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা সিনেমার দাবী রাখে কেন! কে দেখবে, দেখবে না, সেই লাভ-ক্ষতির হিসাব দিবে মজুতদারে, আমরার আসমানদারীই ভালো!”
বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবি: কবি চন্দ্রাবতীকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের প্রথম নারী কবি। মলুয়া, দস্যু কেনারামের পালা এবং রামায়ণ তার অন্যতম সৃষ্টি। তবে তার সৃষ্টির চেয়ে ঢের বেশি নাটকীয় এবং একইসঙ্গে বিয়োগান্তক তার নিজের জীবন। সিনেমায় তার সৃষ্টির সাথে সাথে পোট্রে করা হয়েছে তার নিজের জীবনকেও।
পিরিওডিক্যাল: বাংলা সিনেমায় পিরিওডিক্যাল সিনেমা নির্মাণ হলেও ষোড়শ শতকের সময়কাল নিয়ে সিনেমা বিরল। একবিংশ শতকে এসে প্রায় চারশো বছর আগের সময়কালকে ধারণ করেছে ‘চন্দ্রাবতী কথা’ সিনেমাটি।
বাংলার লোক আচার: সিনেমায় চন্দ্রাবতী কিংবা তার সৃষ্টি ফোকাস হলেও পাশাপাশি চারশো বছর আগের সমাজবাস্তবতা সম্পর্কেও দর্শক ধারণা পাবেন। কেমন ছিলো সেই সময়ের বাংলা। সেই সময়ের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সহ ধর্ম, রাজনৈতিক অবস্থান- সম্পর্কেও ধারণা পাবেন দর্শক।
চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত: ২৫ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় ‘চন্দ্রাবতী কথা’র। ছবিটি সেই উৎসবের ‘এশিয়ান সিলেক্ট নেটপ্যাক অ্যাওয়ার্ড’ বিভাগে মনোনীত হয়। এরপর আরো বেশকিছু চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছিলো সিনেমাটি।
চন্দ্রাবতী কথা নির্মাতা: এন রাশেদ চৌধুরী অভিনেতা: দোয়েল ম্যাশ, ইমতিয়াজ বর্ষণ, নওশাবা আহমেদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। মুক্তি: ১৫ অক্টোবর ২০২১ প্রেক্ষাগৃহ: বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্স, সীমান্ত সম্ভার, যমুনা ব্লকবাস্টার, সিনেস্কোপ [নারায়ণগঞ্জ] অনলাইন ও টেলিভিশন সত্ব: চ্যানেল আই