মোরশেদ আলম, চাঁদপুর: চাঁদপুরে কালোবাজারিদের হাতে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট। অভিযোগ উঠেছে নির্ধারিত মূল্যে ৮৫ টাকার টিকিটি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। বেসরকারি কোম্পানি মেসার্স এন এল ট্রেডিং এর ব্যবস্থাপনায় চাঁদপুর-চট্টগ্রামের চলাচলকারী সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ এই ট্রেনের বেশ কয়েকজন যাত্রীর।
কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ না করায় দিন দিন চক্রটির দৌরাত্ম্য আরও বাড়ছে। যাত্রীরা এই বিষয়ে স্থানীয়ভাবে কোন ধরণের অভিযোগ কিংবা সমাধান না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হচ্ছে। যার ফলে এই ট্রেনের চাঁদপুরের যাত্রীদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চাঁদপুরে স্টেশনে অবস্থানরত চট্টগ্রামগামী যাত্রী আব্দুল্লাহ বলেন, আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে চাঁদপুর স্টেশনে দুপুর ১টার পূর্বে উপস্থিত হই। সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের কাউন্টারে গিয়ে জানতে পারি সকল টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। অথচ আমি টিকিটের জন্য লাইনে থাকা অবস্থায় কলোবাজারি চক্রের সদস্যরা কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে গেছেন। পরে কাউন্টার থেকে বলা হয় স্ট্যান্ডিং টিকিট নেয়ার জন্য। আমাকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত দাঁড়িয়ে যেতে হবে। আমারমত একই ধরণের সমস্যায় পড়েছেন আরো বহুযাত্রী।
সাগরিকা এক্সপ্রেসের টিকিট বিক্রেতা সরোয়ার জানান, বিভিন্ন পরিচয়ে কিছু লোক এসে আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টিকিট ক্রয় করে।
সাগরিকা এক্সপ্রেস পরিচালনাকারী এন এল ট্রেডিং এর ইনচার্জ মো. খলিল এর কাছে টিকিট কালোবাজারে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
টিকিটের মূল্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে সকাল ৭.৩০ মিনিটে এবং চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় দুপুর ২.৩০মিনিটে। চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম টিকিটের নির্ধারিত মূল্য ৮৫টাকা। একই টিকিট কালোবাজারে বিক্রি হয় ১শ’ ২০ থেকে ১শ’ ৫০টাকা। চাঁদপুর থেকে লাকসাম নির্ধারিত টিকিট মূল্য ৩০টাকা। কালোবাজারে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০টাকা। কালোবাজিরর মাধ্যমে টিকিটের অতিরিক্ত নেয়া মূল্য টিকিট বিক্রেতা, ইনচার্জ ও চক্রের সদস্যরা হাতিয়ে নিচ্ছে।
চাঁদপুর স্টেশন মাষ্টার সোয়াইবুল শিকদার বলেন, যেহেতু এই ট্রেনটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনা চলাচল করছে। যাত্রীদের কোন অভিযোগ পেলে আমরা এর কোন ব্যবস্থা নিতে পারি না। তাদের কোম্পানির চট্টগ্রামের দায়িত্বরত ম্যানেজারই ব্যবস্থা নিতে পারেন। আমাদের কাছে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ প্রায় সময়ই আসে।
প্রসঙ্গত ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। কিন্তু এরপর চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রেলপথের ব্যাপক উন্নয়ন ও গতি বৃদ্ধি হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ওই সময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগ ট্রেনটি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ায় প্রতিবাদ জানায়। নেতারা তখনই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাদের বহু শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বেন এবং কর্তৃপক্ষ যেন পূর্বের ব্যবস্থাপনায় ট্রেনটি নিয়ে আসেন।