বিএনপিকে স্বৈরচারী আদর্শ ও সন্ত্রাসের ধারক-বাহক উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উগ্র-সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি সবসময় গণতন্ত্রের পথকে ভয় পায়। তাদের রাজনীতি হলো- যেকোন উপায়ে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা।
সোমবার ৭ আগস্ট গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বিবৃতি দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিরোধী দল ও মত দমনের কথা বলছেন! একদিকে তারা লাগাতার মিছিল-মিটিং সমাবেশ করে এবং সরকারের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ মিথ্যাচার-অপপ্রচার চালাচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী মত দমনের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করছে। বিএনপি নেতারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তাদের অন্তর চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির তথাকথিত আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলামরা এখন পাগলের প্রলাপ বকছেন। বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে এবং জনগণ দ্বারা বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি নেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, বিএনপি এক এক সময় এক এক কথা বলে। কখনও বিদেশি প্রভুদের কৃপা প্রত্যাশায় তাদের স্তুতি করে। আবার কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন, নির্বাচনী ব্যবস্থা হত্যা করে এখন তারা নিজেদের গণতন্ত্রকামী হিসেবে প্রকাশ করছে, যা হাস্যকর। সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান ও তার উত্তরসূরী খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশে শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানপন্থীরা রাজনীতি করতে পেরেছে। তাদের সময় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অবাধ বিচরণ ছিল।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও প্রগতিশীল চেতনা নির্বাসিত ছিল। ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতা দখলের পর আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে ‘সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশ’-এ নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নিজেদের কৃতকর্মের জন্য বিএনপির মধ্যে কোনো অপরাধবোধ নেই। তারা এখনো ওই হামলাকারীদের পক্ষে সাফাই গায়। আরেকটি ১৫ আগস্ট সৃষ্টির হুমকি দেয়। যে দল নিজেরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে না, দেশের মানুষকে তারা কী গণতন্ত্র দেবে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মানিবক, কল্যাণকর ও সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় ধারাবাহিভাবে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।
দেশমাতৃকার এই সাফল্য-সংগ্রাম এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বাক-স্বাধীনতা সুসংহত রয়েছে বলেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার নাগরিকের আশা-আকাক্সক্ষা ও মতামতকে ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে বলেই বাংলাদেশ আজ ধারাবাহিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।