বাংলা সিনেমায় উষ্ণতা ছড়ানো ‘আইটেম গান’ মানেই নির্মাতা-প্রযোজকরা বিপাশা কবিরকে চাইতেন! বহু হিট সিনেমার আইটেম গানে পারফর্ম করে বিপাশা পরিচিতি পেয়েছেন। সেই বিপাশা কবির সিনেমা অভিনয় ছেড়ে আমেরিকা স্থায়ী হয়েছেন।
গত জানুয়ারি থেকে নিউ ইয়র্কে বসবাস করছেন এই অভিনেত্রী। চ্যানেল আই অনলাইনকে বিপাশা কবির জানান, স্থায়ী বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। সেখানে নতুন করে জীবনকে সাজাচ্ছেন।
২০০৯ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় ১৪তম অবস্থানে ছিলেন বিপাশা। পরে দু-চারটি নাটকে অভিনয় করেন। ২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘ভালোবাসার রঙ’ ছবিতে শখের বসে আইটেম গানে পারফর্ম করার পর তিনি আলোচিত হন। বিপাশা জানান, জাজ থেকে নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। প্রথম ছবির অংশ হিসেবে থাকার জন্য আইটেম গানটি করেন। এরপর থেকে তার গায়ে ‘আইটেম গার্ল’ তকমা লাগে।
২০১৬ পর্যন্ত ৫০টির বেশি আইটেম গান করেন তিনি। ‘আইটেম গার্ল’ হিসেবে কাজ করে নেতিবাচক কথা শুনতে হতো? উত্তরে বিপাশা বলেন, মাঝেমধ্যে শুনতে হয়। ফ্যামিলির দিক থেকে দেখলে আইটেম গার্ল পরিচিতি খারাপ চোখে দেখে। মাঝেমধ্যে এগুলো খারাপ লাগে। তবে, নেতিবাচক কথার চেয়ে মানুষের ভালোবাসা বেশি পেয়েছি। সবার ভালোবাসা আর উৎসাহ না পেলে এতগুলো কাজ করতে পারতাম না।
আইটেম গানে পারফর্ম করতে করতে এক ঘেয়েমি লাগছিল বিপাশার। চেয়েছিলেন নায়িকা হবেন। পরে গুণ্ডামি, আড়াল, পাষাণ, ক্রাইম রোড, যার নয়নে যাকে লাগে ভালো, পরাণে পরাণ বান্ধিয়া, সোলমেটসহ ১১টির মতো সিনেমা করেন তিনি। বিপাশা বলেন, ”সিনেমাগুলো ঠিকঠাক থাকলেও যেভাবে আশা করেছিলাম তেমন রেসপন্স পাইনি। আমার অভিজ্ঞতা, একবার কোথাও সেট হয়ে গেলে সেই গণ্ডি থেকে বেরিয়ে নতুন করে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া কঠিন। আইটেম গান ছেড়ে হিরোইন হয়ে আমার একই অবস্থা হয়েছে।”
সিনেমার অবস্থা অবনতির দিকে যাওয়ায় উন্নত ভবিষ্যতের আশায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বিপাশা কবির। গত ১০ মাস যাবৎ সেখানে থাকার পর বিপাশার উপলব্ধি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেননি। কথা প্রসঙ্গে জানান, তার জীবনে অনেককিছুর পরিবর্তন হয়েছে। সেগুলো সময় হলে সবকিছু জানাবেন। এখনও আমেরিকার নাগরিকত্ব পাননি। বিপাশা জানান, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। হয়তো শিগগির পেয়ে যাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার আরেক কারণ জানিয়ে বিপাশা বললেন, ‘আমি নিজেকে অনেক ভালো আর্টিস্ট দাবী করছি না। স্ক্রিপ্ট বেছে বেছে কাজ করতে গেলে অনেক বড় আর্টিস্ট হয়, আমি আসলে তেমনটা নই। তবে যেসব ছবির অফার আসছিল আমার কাছে ভালো লাগছিল না। অনেকবার দেখেছি, প্রযোজক নিজেই হিরো হতে চান। এসবকিছু আমি নিতে পারিনি। আইটেম সং করা বাদ দিয়ে যখন হিরোইনে কনভার্ট হলাম তখন যেসব ছবি আসছিল মনে হচ্ছিল এসব করা আর না করা একই ব্যাপার। সত্যি বলতে আমার ভালো লাগছি না। এজন্য হতাশ না হয়ে মুভ অন করছি।’
”এখন আর সেভাবে কাজ করার ইচ্ছেও নেই। তবে আমার অসম্পূর্ণ কাজ থাকলে সেগুলো অবশ্যই শেষ করবো। আগামীতে আমার ‘সোলমেট’ ছবিটি মুক্তি পাবে। সত্যি কথা বলতে কখনও ভাবিনি আমেরিকায় এসে সেটেল হবো। যুক্তরাষ্ট্রে থেকে মনে হচ্ছে এখানে থেকে জীবনটা সাজানো দরকার।”