জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কাদের স্বার্থে কী উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়েছিল এবং এই ঘটনার নেপথ্যে কারা জড়িত তা ৪৭ বছরেও জাতি জানতে পারেনি।
তাই ইতিহাসের বৃহত্তর স্বার্থেই একটি গ্রহণযোগ্য নাগরিক কমিশন গঠন করে এই হত্যাকাণ্ডের কারণ ও চক্রান্তের সাথে কে কিভাবে জড়িত তার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করার দাবি জানিয়েছে আত্মদায়বদ্ধ সামাজিক সংগঠন ‘প্রজন্মের চেতনা’।
শুক্রবার ১২ আগস্ট বিকেলে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
প্রজন্মের চেতনা’র কেন্দ্রীয় কমিটি মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিভীষিকাময় কালরাতে বাঙালি জাতির জনক বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যদিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক অগ্রযাত্রাকে রুখে দেয়া হয়েছিল।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি চরম কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেদিন শুধু বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়নি, হত্যা করা হয়েছিল তাঁর নিকট আত্মীয় স্বজনসহ মোট ২২ জনকে। যা আমাদের দীর্ঘদিনের বীরত্ব, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে মুছে দিয়েছে।
প্রজন্মের চেতনার ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক শাজাহান কবির সুমন বলেন, জাতি হিসেবে আমরা নিপতিত হয়েছি কলঙ্কের স্রোতে। এ হত্যা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর মত ইতিহাসে একজন বিরলপ্রজ ব্যক্তিকে হত্যা নয় এ হত্যা একটি স্বাধীন জাতির সুস্থ সবল চেতনা সমৃদ্ধ বিজ্ঞানমনস্ক ভেদ-বৈষম্যহীন আলোকিত মুক্ত জাতিতে রূপান্তরের স্বপ্নের হত্যা।
প্রজন্মের চেতনার যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম রাশেদ রাব্বি বলেন, দুঃখী মেহনতি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর প্রশ্নে রাজনৈতিক আন্দোলনে শেখ মুজিব ছিলেন স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে আপোষহীন। তা মুক্তিযুদ্ধের আগেই হোক বা পরেই হোক। তাই তিনি সবসময়ই দেশি-বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। তাই আমরা জনক হত্যার মূল রহস্য উন্মোচনের জন্য কমিশন গঠনের কথা বলছি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে এ ধরনের কমিশন গঠনের বিষয়টি আজও স্বীকৃত।
সংগঠনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম নবী হোসেন বলেন, ৪৭ বছর আগে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিসমূহ এক হয়ে ভারত মহসাগরের নিরবচ্ছিন্ন আধিপত্য বজায় রাখতে এবং বাংলাদেশ বিনির্মাণের বাস্তবসম্মত স্বপ্নকে পরিকল্পিতভাবে বিনষ্টের লক্ষ্যে যুদ্ধ জয়ের চার বছর যেতে না যেতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হবে। আমাদের সকলেরই মনে রাখা দরকার, তিনি বাংলাদেশ আর ভারত সাগরের উপকূলীয় রাষ্ট্রসমূহে বসবাসরত শান্তিকামী মানুষের স্বার্থ রক্ষার্থেই জীবন দিয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, নিখাদ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ বিশ্ববন্ধু এদেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ও জনগণের স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে ছিলেন অনড়-অটল-অবিচল বিশ্বস্ত। দেশি-বিদেশি কোনো শক্তিই বিশ্ববন্ধুকে কখনও এ প্রশ্নে নিম্নতম মাত্রায় কক্ষচ্যুত করতে পারেনি।
মানববন্ধন কর্মসূচির সাথে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের জনযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ গেরিলা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ছালেক-উর-রহমান (সুমন), সদস্য রবিউল আওয়াল নয়ন, আবদুল আলীম পার্থ, হাবিব-উন-নবী নুর।