৭৪ পেরিয়ে সত্তরে ৭৫ বছরে পা রাখলেন বরেণ্য অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর। ১৯৪৬ সালের ৩১ অক্টোবর নীলফামারী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
এ উপলক্ষে রবিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘তোমারই হোক জয়’ শীর্ষক জন্মোৎসব। এই নন্দিতকে ঘিরে এটাই প্রথম বড় কোনও আয়োজন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে ‘আসাদুজ্জামান নূর জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি’। এতে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। এছাড়াও আবৃত্তিকর্মী, নাট্যকর্মী, সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পীসহ সংস্কৃতির সব শাখার মানুষ অংশ নেবেন বলে জানান উদযাপন কমিটির অন্যতম সদস্য গোলাম কুদ্দুছ।
এই আয়োজন সম্পর্কে আসাদুজ্জামান নূর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি তো এতোদিন এসব এড়িয়ে গেছি। এবার আর এড়াতে পারলাম না। যদিও নিজে কিছু করছি না। আহকাম উল্লাহ সবাইকে নিয়ে একটা কমিটি করেছে। গোলাম কুদ্দুছ আছে, অনুপম সেন সভাপতি। ওরাই সব আয়োজন করছে। আমাকে শুধু হাজির হতে বলা হয়েছে। আর কিছু জানি না। আরও অনেকেই চেষ্টা করেছে। আমি আর কোনোটায় রাজি হইনি। বলেছি সবাই মিলে এই একটা আয়োজনই করবো। পঁচাত্তর বছর বেঁচে থাকাও তো একটা বিশাল ব্যাপার। কোনোবারই উদযাপন করি না, এবারই একটু রাজি হলাম।’
বহুমাত্রিক এই সংস্কৃতজনের নানান পরিচয় থাকলেও ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের ‘বাকের ভাই’ হিসেবেই সব প্রজন্মের কাছে বেশি চেনা। বহু গুণে গুণান্বিত এই ব্যক্তির অভিনয় জীবন শুরু হয় মঞ্চনাটকে। দেশের অন্যতম নাট্য সংগঠন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে তিনি স্বাধীনতার সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যুক্ত আছেন। মঞ্চে ‘নূরুল দীনের সারাজীবন’ নাটকে তার অভিনয় এখনো দাগ কেটে আছে অনেকের হৃদয়ে।
ঈর্ষণীয় কণ্ঠ-মাধুর্যের অধিকারী আবৃত্তিকার হিসেবে দেশে বিশেষভাবে পরিচিত নূর। বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি হিসেবে তিনি অনেক বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আসাদুজ্জামান নূর অভিনীত প্রথম টিভি নাটক ‘রঙ্গের ফানুস’। প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে ‘শঙ্খনীল কারাগার’-এ অভিনয় করেন তিনি। এরপর ‘আগুনের পরশমণি’, ‘চন্দ্রকথা’ ও ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমায় অভিনয় করেন। মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন।
আবু নাজেম মোহাম্মদ আলী ও আমিনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে আসাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী অভিনয় করতে এসে হয়ে যান আসাদুজ্জামান নূর। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি, এরপর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া, তারপর চাকরি আর সেখান থেকে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
এককথায় বলা যায় অভিনয়, ব্যবসা ও রাজনীতি- সবদিক দিয়েই সফল ৭৫ বছর বয়সী আসাদুজ্জামান নূর। করেছেন মন্ত্রিত্ব, পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক।