সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক হারে কর্মী ছাঁটাই করেছে বিশ্বের সেরা সেরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান যারা কিনা প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি তৈরি করেছে, তারাই চলতি বছরের মাসগুলোতে অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছে। মহামারি এবং অর্থনৈতিক মন্দা ছাড়াও কর্মী ছাঁটাইয়ের বড় কারণ হিসেবে সেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেই দায়ী করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সিলিকন ভ্যালি প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজেই নতুন নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনও করছে তারা। এইসব প্রযুক্তির দ্বারাই প্রতিস্থাপিত হচ্ছে কর্মীদের চাকরি। বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী ছাঁটাইয়ের পেছনের কারণ হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দায়ী করেছে।
গত জুন মাসে শিক্ষা বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান চেগ জানিয়েছে, তারা তাদের মোট কর্মীদের ৪ শতাংশকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। প্রায় ৮০ জন কর্মচারীকে ছাঁটাই করেছে তারা। প্রতিষ্ঠানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে আরও শক্ত অবস্থানে নেয়ার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
এছাড়াও আইবিএম সিইও অরবিন্দ কৃষ্ণ এইবছর মে মাসে ব্লুমবার্গের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আগামী বছরগুলোতে সংস্থাটির বিভিন্ন সেক্টর এআই দিয়ে প্রতিস্থাপিত হতে পারে বলে মনে করে নিয়োগ বন্ধ করার আশা করছে তারা৷
এবছর এপ্রিলের শেষের দিকে ফাইল-স্টোরেজ পরিষেবা ড্রপবক্স বলেছিল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের কারণে ১৬ শতাংশ বা প্রায় ৫০০ জন কর্মী কমিয়েছে তারা। এদিকে আউটপ্লেসমেন্ট ফার্ম গ্রে অ্যান্ড ক্রিসমাস তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলেছে, এআই এর কারণে মে মাসে ৩,৯০০ জনকে ছাঁটাই করা করেছে তারা। তাদের মতে, এই সমস্ত কাটতি প্রযুক্তি খাতেই ঘটেছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ তাই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য একটি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এআই নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে বলেও মনে করছেন অনেকেই।
কলম্বিয়া বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ড্যান ওয়াং এর মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসময় প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করতে বাধ্য করবে।