চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

জবিতে ভিসি-রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নকল করে বিষয় পরিবর্তনের অভিযোগ

রিদুয়ান ইসলাম: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ধর্ম পরিবর্তন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ডিন এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যান শিক্ষকের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বিষয় পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. সজিব আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী।

বুধবার ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন রইছ উদ্দীন এই শিক্ষার্থীর আবেদন যাচাই করতে গেলে জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি সামনে আসে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল তাকে প্রক্টর অফিসে যোগাযোগ করতে বললে এখানে আসে। পরবর্তীতে প্রক্টর অফিস তাকে আটক করে।

জানা যায়, প্রথমে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয় সজিব আহমেদ। কিন্তু পছন্দের সাবজেক্ট না হওয়ায় সে বিষয় পরিবর্তন করতে চায়। এজন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করতে হয়। আর সেই আবেদন গুলোতে সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষর প্রয়োজন হলে সে নিজেই তা পূরণ করেন।

সজিব আহমেদ মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার মো. আবুল কালামের ছেলে। বর্তমানে সে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ওয়াচম্যান হিসেবে নিয়োজিত আছে।

একটি আবেদন পত্রে তিনি লিখেন, ‘আমি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হই। কিন্তু আরবি বুঝতে না পারায় আমি পরীক্ষায় ফেল করি। পরবর্তীতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে পুনঃভর্তি হই এবং দর্শন বিভাগের জন্য মাইগ্রেশন করি।’

নিজেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লেখা আবেদনে বলেন, ‘আমি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে আরবি থাকায় আমি কিছু বুঝতে পারছি না এবং আমার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে। আমাকে অন্য একটি সাধারণ বিষয়ে মাইগ্রেশান করে পড়াশোনা চালিয়ে যাবার সুযোগ দিবেন।’

আইসিটি দপ্তরে পাঠানো এক স্ট্যাটমেন্টে তিনি লিখেন, ‘আমি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে দর্শন বিভাগে মাইগ্রেশনের জন্য আবেদন করি কিন্তু কোনো মাইগ্রেশন হয় না। পরবর্তীতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে পুনঃভর্তি হয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর সাবজেক্ট পরিবর্তনের আবেদন করি। রেজিস্ট্রার অফিস আমার আবেদন গ্রহণ না করে সরাসরি ভিসি স্যারের কাছে জমা দিতে বলে। আমি আবেদনপত্রটি ভিসি অফিসে দিয়ে আসি। কয়েকদিন পর যোগাযোগ করলে বলা হয় আবেদন পত্রটি আইসিটি অফিসে পাঠানো হয়েছে। সে মোতাবেক আমার কাজটি হয়েছে কি না তা জানার জন্য আমি আইসিটি অফিসে আসি।’

প্রক্টর অফিস থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মামা মো. সাইফুল ইসলাম আসেন। তিনি বলেন, আমাকে আমার বোন (অভিযুক্তের মা) বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে বলেন। তার নাকি নাম-ঠিকানা নিয়ে কী সমস্যা হয়েছে। এসে দেখি এই ঘটনা। কী জন্যে বা কার বুদ্ধিতে সে এমন করছে জানি না।’

এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, বিভাগ পরিবর্তনের জন্য রেজাল্ট প্রকাশ করার সময় বিষয়টি আমার সামনে আসে। ডেপুটি রেজিষ্ট্রারের কাছে আবেদন গেলে তিনি সন্দেহ হলে আমাকে জানান। এরপর তার সব কাগজপত্র চেক করে দেখা যায়, সব কাগজপত্রে জাল সাক্ষর ও সিল দেওয়া।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার স্যারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করায় এক শিক্ষার্থীকে ধরতে পেরেছি। এ নিয়ে আমারা তার বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে। তা ছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।’