আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বড় জয়ের পর ওয়ানডেতে বাংলাদেশ সিরিজ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। দুই ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে আফগানদের পাত্তাই দিল না টিম টাইগার্স। প্রথম ম্যাচে ২ উইকেটের জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে ৬ উইকেটের জয় তুলেছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করেই থামল সাকিবের দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ টি-টুয়েন্টিতে টসে জিতে আফগানদের ব্যাটে পাঠায় বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে খেলা ১৭ ওভারে নেমে আসে। বেধে দেয়া ওভারে ৭ উইকেটে ১১৬ রান তোলে আফগানিস্তান। বৃষ্টি আইনে টাইগারদের ১১৯ রানের লক্ষ্য মেলে। যা ১৬.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ছুঁয়ে ফেলেছে লাল-সবুজের দল।
আফগান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শুরুতে ব্যাটে আসেন লিটন দাস ও রনি তালুকদারের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পাওয়া আফিফ হোসেন। নেমেই দুর্দান্ত শুরু করেন দুজনে। পাওয়ার প্লে’র ৫ ওভারে তোলেন ৫০ রান। বোলারদের দুর্দশা দেখে আফগান অধিনায়ক রশিদ খান বোলিংয়ে আসেন ষষ্ঠ ওভারে। সে ওভারে দলকে সফলতা দেখাতে পারেননি।
আফগানদের প্রথম সফলতা এনে দেন মুজিব উর রহমান। দশম ওভারের প্রথম বলে রশিদ খানের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান লিটন দাসকে। ৬ চারে ৩৬ বলে ৩৫ রান করে আউট হন লিটন। একই ওভারে আফিফকেও ফেরান মুজিব। আফিফ ফেরেন ২০ বলে ২৪ রান করে।
পরের ওভারেই নাজমুল হোসেন শান্তকে ফেরান আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ৬ বলে ৪ রান করেন তিনি। ৭৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। চাপ কাটিয়ে তোলেন সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। ১৪.৩ ওভারে দলকে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছিয়ে ১০৭ রানে আজমতুল্লাহর দ্বিতীয় শিকার হন হৃদয়। ফেরেন ১৭ বলে ১৯ রান করে।
পরে শামীম হোসেনকে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। সাকিব অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ১৮ রানে, শামীম ৭ বলে ৭ রানে। আফগানদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন মুজিব উর রহমান ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই।
এর আগে আফগানদের ব্যাটে পাঠিয়ে শুরুতে সাকিব বোলিংয়ে আনেন তাসকিনকে। সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করেন তারকা পেসার, আফগানিস্তানের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন দ্রুত। দুই রান নিয়ে ইনিংস শুরু করা ওপেনার গুরবাজ চতুর্থ বলেই ছক্কা হাঁকান ডানহাতি তাসকিনকে। পরের বলে তাসকিনের হাতেই বন্দি হন, ৫ বল খেলে করে যান ৮ রান। এই উইকেট দিয়ে ছোট সংস্করণে ৫০তম উইকেটের দেখা পান ডানহাতি পেসার তাসকিন।
দ্বিতীয় ওভারে শরিফুলের পরিবর্তে দলে ফেরা হাসান মাহমুদ মাত্র ২ রান দেন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান জাজাই। চতুর্থ বলে লিটন দাসের গ্লাভসে ক্যাচ দেন তাসকিনের বলে, ৫ বল খেলে ৪ রান করে যান।
বোলারদের ধারাবাহিকতার মাঝে সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে ৭.২ ওভার শেষে হানা দেয় বেরসিক বৃষ্টি। দেড়ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকায় কাটা যায় তিন ওভার। পরে ৮টা ১৫ মিনিটে খেলা শুরু হয়।
বৃষ্টি বিরতির পর আফগানিস্তানের উপর চড়াও হয় বাংলাদেশ। মাঠে নেমে দুই-এক রানের উপর জোর দিয়ে খেলতে থাকে আফগান দলটি। নবম ওভারে নবীকে আউটের তিনটি সুযোগ তৈরি হলেও নিতে পারেননি আফিফ, সাকিব ও লিটন। সহজ ক্যাচ মিস করেন সাকিব ও লিটন।
দশম ওভারে আর ভুল করেননি লিটন। মোস্তাফিজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে লুফে নেন এ উইকেটকিপার। ২২ বল খেলে নবী করে যান ১৬ রান।
১১তম ওভারের প্রথম বলে সাকিবের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন ডানহাতি জাদরান। ২৭ বল খেলে ২২ রান করেছেন। একই ওভারের শেষ বলে সাকিবের দ্বিতীয় শিকার হন বিধ্বংসী নাজিবুল্লাহ জাদরান। ৩ বলে পাঁচ রান করেন তিনি। ৬৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় সফরকারী দল।
১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে ১০৯ রানে টাইগারদের ষষ্ঠ শিকার এনে দেন মোস্তাফিজ। এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে আজমতুল্লাহ ওমরাজাই ধরা পড়েন শামীম হোসেনের হাতে। ২১ বলে ২৫ রান করেন আফগান অলরাউন্ডার।
পরের ওভারেই করিম জানাতকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান তাসকিন। সতেরোতম ওভারের তৃতীয় বলে শান্তর ক্যাচ হয়ে ফেরেন জানাত। ব্যাট হাতে ১৫ বলে ২০ রান করেন তিনি। পরে রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান শেষ করেন ইনিংস। ৩ বলে ৬ রান করেছেন রশিদ, মুজিব ১ বলে ১ রান।
টাইগারদের হয়ে তিনটি উইকেট নেন তাসকিন। সাকিব ও মোস্তাফিজ নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।