চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

ঋতুহীন এক দশক

সত্যজিত, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন হয়ে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তদের পর বাংলা ভাষাভাষি সিনেমা নির্মাতাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত নাম ঋতুপর্ণ ঘোষ।

KSRM

সত্যজিত, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন হয়ে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তদের পর বাংলা ভাষাভাষি সিনেমা নির্মাতাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত নাম ঋতুপর্ণ ঘোষ।

সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যুর বছরে প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় তার। নাম ছিলো ‘হীরের আংটি’। এরপর বেশকিছু সিনেমা নির্মাণ করেন। যার বেশীর ভাগই মানুষের প্রশংসা অর্জনের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করে। তবে দুর্ভাগ্যবশত নির্মাতা হিসেবে সিনেমার সাথে তার যাপন মাত্র কুড়ি বছরের!

Bkash

নাগরিক জীবনের প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি, প্রেম বিরহ আর অবদমন, আর সম্পর্কের জটিলতা। নিউ এজ বাংলা সিনেমার প্রবর্তকও বলা হয় তাকে! যৌনতাকে শৈল্পিকভাবে কীভাবে উপস্থাপন করা যায়, এবং তা মেইনস্ট্রিম আর আর্টফর্মের সমন্বয়ের ভিতর দিয়ে চর্চা করা যায় তা ভীষণরকমভাবে দেখিয়েছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।

প্রায় ছবিতেই তিনি বিচিত্র সম্পর্কের গল্প বলে গেছেন। সাহিত্যের কতো চমৎকার চলচ্চিত্রায়ন হতে পারে, তা নতুন সময়ের বাংলা চলচ্চিত্রে ঋতুপর্ণের চেয়ে আর কে ভালো দেখাতে পেরেছে! সমকামিতা এবং লিঙ্গান্তর বা রূপান্তরিত নারী পুরুষের গল্প দেখিয়েছেন অনায়াসে। তার ছবির ভেতর দিয়ে সমাজে সম্পর্কের রকমফের কতো অসাধারণভাবে ফুটে উঠেছে, ‘চিত্রাঙ্গদা’ তার উৎকৃষ্ট উদাহারণ।

Reneta June

১৯৯২ সালে সিনেমা বানানো শুরু, মৃত্যু ২০১৩ সালের ৩০ মে! তবুও এই অল্প সময়ে যেসব সিনেমা তিনি রেখে গেছেন, বলা হয় এগুলো ছাড়া বাংলা সিনেমার ইতিহাস লেখা অসম্ভব!

সিনে জগতে ঋতুহীন এক দশক পূর্ণ হওয়ার দিনে আলোচিত কয়েকটি সিনেমার খোঁজ থাকলো এখানে:

শুভ মহরত
ঋতুপর্ণের ছবি মানেই অন্য রকম দর্শন। তার ছবিতে নারীর গভীরতা, তাদের মনোবিশ্লেষণ যেভাবে দেখা যায় সেটা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দেয়। আগাথা ক্রিস্টির ‘দ্য মিরর ক্রাকড ফ্রম সাইড টু সাইড’ এর গল্পকে শুভ ‘মহরত’ সিনেমায় নিজের মত করে বলেছেন ঋতুপর্ণ। শর্মিলা ঠাকুর, রাখি, নন্দিতা দাসের অসাধারণ অভিনয়ও যে কাউকে তৃপ্তি দিবে।

বিজ্ঞাপন

চোখের বালি
সিনেমায় নিজের মতো ঢেলে সাজানোর অভ্যেস চিরকালের। সেটা রবীন্দ্রনাথ কিংবা তারাশঙ্কর, যারই গল্প হোক। রবীন্দ্রনাথের ‘চোখের বালি’ যারা পড়েছেন, তাদের কাছে হয়তো ঋতুপর্ণের সিনেমাটি অন্যরকম বক্তব্য নিয়ে হাজির হতে পারে! ছবিতে ‍দৃষ্টি কাড়বে ঐশ্বরিয়া রাই ও প্রসেনজিতের দারুণ অভিনয়! ছবিটি সমালোচকদেরকেও খুশি করে, সেইসঙ্গে বক্স অফিসেও বেশ ভালো ব্যবসা করে।

সব চরিত্র কাল্পনিক
২০০৯ সালে নির্মিত ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রশংসিত একটি সিনেমা। এই চলচ্চিত্রে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিপাশা বসু এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ৩০তম ডারবান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য নির্বাচিত হয় এবং ২০০৯ সালে সেরা বাংলা চলচ্চিত্র হিসাবে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। শুধু তাই নয়, এই চলচ্চিত্রটি ২০০৯ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রদর্শিত হয়।

দোসর
নানা ধরনের সম্পর্ক ঘিরে সাপের মত জড়িয়ে যাওয়া কিছু মানুষের গল্প তুলে ধরেন ‘দোসর’ এ। শীর্ষেন্দু মুখার্জীর রচনায় দারুণভাবে পর্দায় তুলে ধরেন ঋতুপর্ণ। এই ছবির অভিনেত্রী কঙ্কনা সেন শর্মা ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করে। প্রসেনজিৎ সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বিশেষ জুরি) অর্জন করেন। ২০০৭ সালে ৬০তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় দোসর!

এছাড়াও উনিশে এপ্রিল, দহন, বাড়িওয়ালী, তিতলি, অসুখ ও রেইনকোট এর মতো সাধারণ সব সিনেমা নির্মাণ করেছেন ঋতু!

বিজ্ঞাপন

Nil Joler Kabbo
Bellow Post-Green View