চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

৯৩ বছরে চে: তাকে নিয়ে যতো ছবি

চে গুয়েভারা। যার বিপ্লবী জীবনাদর্শ স্পর্শ করেনি শিল্প সংস্কৃতি অঙ্গনে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর। বাংলা কবিতা ছাড়াও গল্প-উপন্যাস ও থিয়েটারে চে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন। বিশ্বের প্রতিটি ভাষায় তাঁকে নিয়ে লেখা হয়েছে বিস্তর। সাহিত্য রচনার প্রসঙ্গতেও স্থান করে নিয়েছে তার জীবনাদর্শ, তার সংগ্রাম।

কিন্তু সে তুলনায় তাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে হাতে গোনা। এরমধ্যে ‘চে’ (১৯৬৯), ‘বুলেট ফর চে’, ‘চে’ পার্ট-১ ও পার্ট-২, ‘দ্য মোটর সাইকেল ডায়েরিস’ (২০০৪), ‘দ্য হেন্ডস অব চে গুয়েভারা’ (২০০৬), চে: রাইজ এন্ড ফল (২০০৭) উল্লেখযোগ্য। আজন্ম বিপ্লবী চে’র ৯৩তম জন্মদিনে এবারও কিছু চলচ্চিত্রের খোঁজ থাকলো এখানে:

‘চে!’ (১৯৬৯):
বিপ্লবী চে গুয়েভারাকে হত্যার দুই বছরের মধ্যে হলিউডে নির্মিত হয় তার জীবনীধর্মী ছবি ‘চে!’। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’ খ্যাত তারকা অভিনেতা ওমর শরীফ। ছবিটি নির্মাণ করেন রিচার্ড ফ্লেইসার। ‘চে!’ চলচ্চিত্রে ১৯৫৬ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সময়কে পোট্রেট করা হয়। মুক্তির পর তুমুল সমালোচিত হয় ছবিটি। অভিযোগ উঠে, কিউবার বিপ্লবকে ঠিকভাবে ছবিতে উপস্থাপন করা হয়নি এবং প্রকৃত চে গুয়েভার জীবনীকেও আড়াল করা হয়েছে।

দ্য মোটর সাইকেল ডায়েরিস (২০০৪):
আর্নেস্তো চে গুয়েভারাকে নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল ও জননন্দিত চলচ্চিত্র মোটর সাইকেল ডায়েরিস (২০০৪)। এই চলচ্চিত্রে চে গুয়েভারার চরিত্রে অভিনয় করে পৃথিবীব্যাপী সাড়া ফেলে দেন মেক্সিকান অভিনেতা গায়েল গার্সিয়া বার্নেল। ছবিতে কুড়ি বছর বয়সী চে গুয়েভারাকে তুলে ধরা হয়েছে। তখন চে গুয়েভারা ছিলেন শিক্ষানবীশ ডাক্তার। তিনি ও তার বন্ধু আলবার্তো গ্রানাদো লা পেদারোসা একটি মোটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বুয়েনোস আইরেস থেকে। উদ্দেশ্য লাতিন আমেরিকা ঘুরে দেখা। আর্জেন্টিনার আটলান্টিক উপকূল ধরে আন্দিজ পার হয়ে চিলি, সেখান থেকে পেরু, কলম্বিয়া ও শেষে ভেনিজুয়েলার কারাকাস এ। এক বছরের অধিক সময় তারা পরিভ্রমণ করেন লাতিন আমেরিকার আনাচে কানাচে। প্রায় ১২,০০০ মাইল পাড়ি দেন। চরম দারিদ্র্যতার মধ্যে বেঁচে থাকা কৃষকদের দেখে তিনি অভিভূত হন চে। এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সঞ্চিত করা ডায়েরিতে (The Motorcycle Diaries) তিনি লিখেছেন, ‘মানব সত্ত্বার ঐক্য ও সংহতির সর্বোচ্চ রূপটি এসকল একাকী ও বেপরোয়া মানুষদের মাঝে জেগে উঠেছে’। এই ভ্রমণের মাধ্যমে চে গুয়েভারা লাতিন আমেরিকার সাধারণ মানুষের দারিদ্র ও দুঃখ-কষ্ট নিজ চোখে দেখতে পান, এবং তার বিপ্লবী রাজনৈতিক চেতনা ধীরে ধীরে জেগে উঠতে থাকে।

দ্য হেন্ডস অব চে গুয়েভারা (২০০৬):
মানুষের তরে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতেই সংগ্রামের পথ বেছে নেন চে গুয়েভারা। তাতে আঁতকে উঠে আমেরিকাসহ পুঁজিতান্ত্রিক দেশগুলো। চে’কে তারা মুর্তিমান আতঙ্ক মনে করলে তার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে। ১৯৬৭ সালে তাকে সিআইএ আহত অবস্থায় আটক ও হত্যা করে। পরদিন চের মৃতদেহ সবার জন্য রেখে দিলেও বিশ্ববাসী আর চের মৃতদেহের সন্ধান পায়নি। কিন্তু ১৯৯৭ সালে বলিভিয়ার মাটিতেই চের দেহাবশেষের সন্ধান পাওয়া যায়। মৃত অবস্থায় যে জ্যাকেট পরা ছিলো তার, সেটার পকেটে তামাকের ছোট্ট পুঁটলি ছিলো। কিন্তু তার দেহ থেকে হাতকে কেটে উধাও করে দেয় সিআইএ। চের কাটা হাত, তার মৃত্যু এবং লাশ পাওয়ার বিষয়টি নিয়েই ২০০৬ সালে নির্মিত হয় ‘দ্য হ্যান্ডস অব চে গুয়েভারা’। এটি ফিচার ফিল্ম নয়, তথ্যচিত্র। এর পরিচালক পিটার ডি কক।

চে (২০০৮):
২০০৮ সালের ৪ ডিসেম্বরে মায়ামি বিচে আর্ট ব্যাসল চলচ্চিত্র উৎসবে ‘চে পার্ট ওয়ান’ চলচ্চিত্রের প্রথম প্রদর্শনী হয়। একই সঙ্গে জীবনী, নাটক, ইতিহাস এবং যুদ্ধনির্ভর এ চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ২৪ জানুয়ারি ২০০৯-এ আমেরিকাতে। স্টিভেন সোডারবার্গ পরিচালিত এ মুভিটিতে চে এর ভূমিকায় ছিলেন বেনেসিও দেল তেরো। ২০০৯ এর ফেব্রুয়ারি তে চে চলচ্চিত্রের সিকুয়েল ‘চে পার্ট টু’ মুক্তি পায়।