বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর তার বৃহত্তর পরিবারের আত্মীয়দের খুঁজে বের করে কাউকে গুম করেছে খুনিচক্র, কাউকে গুলি করেছে। পরের বছরগুলো আতঙ্ক আর বিভীষিকার মধ্যে গেছে তাদের।
৭৫ এর ১৫ আগস্ট ভোরের নৃশংসতা শেষে সবাই যখন জানতে পারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করেছে খুনিরা, তখন শেখ ফজলুল হক মনি ও আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়ির বেঁচে থাকা সদস্যদের শেষ আশ্রয়ের আশাটুকুও শেষ হয়ে যায়। হতাহতদের মধ্যে বেঁচে থাকাদের খোঁজে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও আসে খুনি চক্রের একটি দল।
শেখ ফজলুল হক মনি এবং বেগম আরজু মনিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা শেখ ফজলুল করিম সেলিম সেদিন সেখান থেকে চিকিৎসকদের সহায়তায় পালিয়ে যেতে পারেন।
ধানমন্ডিতে শেখ মনির বাসভবনের পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দেখতে পান, খুনিরা তন্ন তন্ন করে তাদের খুঁজছে। শুধু পরিবারের বড় সদস্যদেরই নয়, শেখ ফজলুল হক মনির দুই শিশু সন্তানকেও খুঁজে বেড়িয়েছে ঘাতকেরা। পরে তাদের স্বজনদের ওপর চালিয়েছে অত্যাচার।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আমরা যে বেঁচে গেছি এই খবরটা ওরা (ঘাতকরা) পরে বুঝতে পারে। যার জন্য ওরা আমাকে এবং আমার ভাই মারুফকে খুঁজে বেড়িয়েছিল, বিভিন্ন জায়গায় হামলাও করেছিল।
আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসা থেকে হতাহতদের ঢাকা মেডিকেলে আনার আগে রমনা থানার ওসি আনোয়ারের পরামর্শে পালিয়ে যান তার ছেলে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। আর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকেন আবদুর রব সেরনিয়াবাতের স্ত্রী, দুই মেয়ে ও আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর স্ত্রী শাহানারা আবদুল্লাহ।
আবুল হাসনাত ও শাহানারা আবদুল্লাহর বেঁচে যাওয়া দুই ছেলে-মেয়েকে তাদের নানা নিয়ে যান বরিশাল। দীর্ঘদিন তারা বাবা-মাকে ছাড়া থাকে নানা বাড়িতে।
বেঁচে যাওয়া শাহানারা আবদুল্লাহ বলেন, বঙ্গভবন থেকে ফোন আসতো আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করত। বহুদিন পালিয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে।
শেখ ফজলুল হক মনির পরিবারের বেঁচে থাকা সদস্যরা তিন বছর পালিয়ে ছিলেন ভারতে। আর আবদুর রব সেরনিয়াবাতের পরিবারের বেঁচে থাকা সদস্যরা যাযাবরের মতো পালিয়ে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: