ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসাবে সারা দুনিয়া মেনে নিয়েছে তাকে। টেস্ট ব্যটিং’র অধিকাংশ রেকর্ড’র মালিক স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানকে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ক্রীড়াবিদ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে অনেক আগে। নিউ সাউথ ওয়েলস তার অঙ্গরাজ্যে জন্ম নেয়া এই কৃতি সন্তানের নামে সিডনির উপকণ্ঠে গড়ে তুলেছে ব্র্যাডম্যান মিউজিয়াম এন্ড ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট হল অফ ফেইম।
২০০৮ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের কোটামুন্ডায় জন্ম নেয়ার তিন বছর পর কাঠমিস্ত্রি বাবা জর্জ ব্র্যাডম্যান পরিবার নিয়ে চলে আসেন পাশের শহর বাউরালে। বাউরালের শেফার্ড স্ট্রিটের সেই বাড়ীতেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি স্যার ডনের। শেফার্ড থেকে গ্লিব স্ট্রিট.. শৈশব-কৈশোর কাটানো সেই ছোট্ট শহর বাউরালে ব্র্যাডম্যান ফাউন্ডেশন ও আইসিসি ১৯৯৬ সালে গড়ে তুলেছে ব্র্যাডম্যান মিউজিয়াম ও ইন্টারন্যাশনাল হল অফ ফেইম সেন্টার।
২০ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যাটিং-দেবতার অতিমানবীয় সব কীর্তি’র স্মারক দিয়ে সাজানো যাদুঘর। আছে তার জীবনে প্রথম ব্যবহার করা ব্যাট, ক্রিকেট কিটস, ব্লেজার, গ্লাভস, প্যাড কত কি?
শেফার্ড স্ট্রিটের বাড়ির পানির ট্যাংকের গায়ে গলফ বল ছুঁড়ে ফিরতি বল ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে ব্যাটিং’র অনুশীলন করে ক্রিকেট দুনিয়া জয় করেছিলেন স্যার ডন। তার ওই অনুশীলনের প্রামাণ্যচিত্র যাদুঘরের অন্যতম আকর্ষণ। আছে ব্যাটিং শেষে ড্রেসিং রুমে বিশ্রাম নেয়ার দৃশ্যও।
স্যার ডনের জীবন কাহিনীর উপাখ্যানের পাশাপাশি এসেছে উঠে ক্রিকেট ইতিহাসের নানা উল্লেখযোগ্য ঘটনা, অ্যাশেজ সিরিজ, কেরি প্যাকার্স ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেট এমনকি বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে ছোট্ট একটি গ্যালারিও। ব্র্যাডম্যান অনার্স পাওয়া লিজেন্ড শচীন, স্টিভ ওয়াহ-মার্ক টেইলর, রাহুল দ্রাবিড়রাও আছেন সসন্মানে।
শেফার্ড ও গ্লিব স্ট্রিটে সাধারণ ছেলে থেকে অসাধারণ স্যার ডন হয়ে ওঠার স্মৃতিবিজড়িত মাঠ গ্লিব উইকেট আজ পরিচিত স্যার ডন ওভাল নামে। এই মাঠেই স্কোরার থেকে ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠা তার।
১৯১১ থেকে ১৯২৬ জীবনের শুরু’র ১৫ বছর কাটানো স্যার ডন পরিবারের শেফার্ড স্ট্রিটের সেই বাড়িটি কয়েকবার হাতবদল হয়ে এখন এসেছে ক্রিকেট ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু লিমিং’র হাতে।
ক্যামেরার সামনে আসতে চাননি ব্র্যাডম্যান প্রেমিক লিমিং। তবে ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া এই বাড়িটিকে ভবিষ্যতে বড়মাপের ক্রিকেট যাদুঘরে পরিণত করার কথা জানিয়েছেন।