টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মহী উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ বরাবর দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ভুয়া নিয়োগপত্র, শ্লীলতাহানি ও স্বজনকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার লিখিত অভিযোগ করেছেন হাসপাতালে কর্মরত এক নারী বাবুর্চি। গেল ৮ আগষ্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর এই লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগে জানা গেছে, ভূঞাপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মো. মহী উদ্দিন হাসপাতালের বাবুর্চি (কুক) ওই নারীসহ তার ভাগ্নিকে হাসপাতালের তার (টিএইচও) কোয়ার্টারে যেতে বলেন। পরে ওই বাবুর্চি ও তার ভাগ্নি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কোয়াটারে গেলে তাদের দুইজনকেই আপত্তিকর প্রস্তাব দেন। পরে তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাবুর্চিকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন ওই টিএইচও ডা. মহী উদ্দিন। কিন্তু পরবর্তিতে শ্লীলতাহানি করতে না পেরে মারধর করেন বাবুর্চিকে।
পরে ওই বাবুর্চি চিৎকার করে টিএইচও’র রুমে ফাঁসি নিতে গেলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এর আগে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচী (এসএসকে) অস্থায়ী ভিত্তিতে উস্বাক/ ভূঞা/ এসএসকে/ ট্রেন্ডার/ জনবল ন্যাস্তকরণ/২০২১/১১৭২ স্মারকে দুই দফায় দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে তার ভাগ্নিকে হাসপাতালের পরিছন্নতাকর্মী হিসেবে নিয়োগপত্র দেন। পরে তাকেও চাকরির ভয় দেখিয়ে আপত্তিকর প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভূঞাপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের বাবুর্চি বলেন, হাসপাতালের টিএইচও আমাকে ও আমার ভাগ্নিকে আপত্তিকর প্রস্তাব দেয়ার পাশাপাশি শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন। এঘটনার দিন তার (টিএইচও) কোয়াটার রুমে ফাঁস নিতে গেলে আশাপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে। এছাড়া ভাগ্নিকে হাসপাতালে পরিছন্নতাকর্মীর চাকরির জন্য দুই দফায় দেড় লাখ টাকা নেন ডা. মহীউদ্দিন। পরে ভাগ্নিকে নিয়োগপত্র দেয়া হয় ঠিকই। পরে দেখি সেই নিয়োগপত্র ভুয়া। অন্যদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে গত ৮ আগষ্ট জেলা প্রশাসক, জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভূঞাপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহী উদ্দিন বলেন, কে বা কার প্ররোচনায় করেছে এটা জানি না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, যেহেতু ঘটনাটি ষ্পর্শকাতর। তাই সেটার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি।
জেলা সিভিল সার্জন আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহবুদ্দিন খান বলেন, ভূঞাপুর হাসপাতালের বাবুর্চির (কুক) লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এটার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা সিভিল সার্জনকে বলা হয়েছে।