দায়িত্বে ব্যর্থতার অভিযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণসহ ৪ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণ দাবি করা হয় অবস্থান কর্মসূচি থেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘করোনা ভাইরাস সংকট এখন বৈশ্বিক মহামারীতে রূপান্তরিত হয়েছে। বাংলাদেশে অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। অথচ সম্প্রতি স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি বর্তমান সরকারের সফল অর্জনগুলোকে ম্লান করে দিচ্ছে ।’
‘‘পিপিই-মাস্ক কেলেঙ্কারী, আরটি-পিসিআর মেশিন কেলেঙ্কারী, হিসাবরক্ষকের টেন্ডার কেলেঙ্কারী, জিকেজি কেলেঙ্কারী ইত্যাদি ঘটনার মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও রিজেন্ট হাসপাতালের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিই প্রমাণ করে স্বাস্থ্যখাত এখন মাফিয়াদের দখলে। করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারীতেও এনাদের অপকর্ম থেমে নেই। আমরা অবিলম্বে ব্যর্থতার দায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণ দাবি করছি।”
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আল মামুন বলেন, ‘এতো বিতর্ক ও সমালোচনার পরেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির খুঁটির জোর আসলে কোথায়? দায়িত্বশীল পদে থাকার কারণে তারা দুজন স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি ও অনিয়মের দায়ভার কখনোই এড়াতে পারেন না। ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অনেক আগেই তাদের পদত্যাগ করা উচিত ছিলো।’
‘‘জনস্বার্থে তাদেরকে দ্রুত অপসারণ না করলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ দেশব্যাপী সকল ইউনিটকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’’
এর আগে শনিবার (১১ জুলাই) একই দাবিতে টিএসসিতে মানববন্ধন করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির অপসারণ চেয়ে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় তারা। সেই সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় আজ থেকে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
যে ৪ দফা দাবি
১. ব্যর্থতার দায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
২. স্বাস্থ্য খাতের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৩. দেশের সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ ইউনিট স্থাপন করে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. দেশের সকল জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহে চিকিৎসার মানসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি উন্নতমানের আইসিইউ বেড স্থাপন করতে হবে।