‘যে ঘটনা পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া যেত। গুজরাটে গুজরাটে, যে ঘটনা একদিনে চুপ করিয়ে দেওয়া যেত। বামিয়ানে, কান্দাহারে, প্যালেস্টাইনে যে ঘটনা দু’দিনে থামিয়ে দেওয়া যেত। সেটা না করে যে যার নিজের ক্রুশকাঠ বহন করে চলেছি। ভাই খুঁজে বেড়াচ্ছে ভাইকে। মা বসে আছে ভাত নিয়ে। ছেলে এই আসছি বলে বেরিয়েছিল। বাবা নদী ধরে হাঁটতে হাঁটতে গোধূলী পৌঁছে শুনতে পেলেন। পাখির ডাক। পাখির ডাক নাকি তাঁর পুড়ে যাওয়া বালক পুত্রের কণ্ঠ?’
-বর্তমান পৃথিবীর এই ভয়াল রূপই যেন মঞ্চায়িত হলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্যকলা মিলনায়তনের মঞ্চে। আর এমন মনমুগ্ধকর আয়োজনটি মঞ্চস্থ করেছে স্বরশ্রুতি।
তাদের ভাষ্য: ওই ভাইকে সম্মান জানাতে এই জমায়েত। ওই মা-কে সম্মান জানাতে এই সন্ধ্যা। ওই বাবাকে সম্মান জানিয়েই স্বরশ্রুতির ‘মানুষেরা মানুষের পাশে’ আয়োজনটি।
বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মাঝে মৈত্রীবন্ধন আরও দৃঢ় করার প্রত্যয়ে গেল শুক্রবার থেকে রাজধানীতে শুরু হয়েছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। দশ দিনব্যাপী এই উৎসবে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছিলো স্বরশ্রুতি’র প্রযোজনা ‘মানুষেরা মানুষের পাশে’। যার গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মীর মাসরুর জামান রনি।
পরিবেশনায় ছিলেন মো. আহকাম উল্লাহ, মীর মাসরুর জামান রনি, তামান্না পারভীন ছন্দা, খাদিজাতুল জান্নাত, আশরাফুল আলম রাসেল, মহসিন মানসুর, সেগুফতা ফারহাৎ সেঁজুতি, মেহেদী হাসান, শাহ আলী জয়, ইসরাত নাজনীন চৌধুরী, মুস্তাফিজ জুয়েল, মীনাক্ষী ভৌমিক, জোবায়ের মিলন, মো. আল আমিন, জিনিয়া ফেরদৌস, লিমন ওয়ার্দা ধী, লাইসিন লাবিবা লীন, রিয়াজ সেজান, লাকী আখন্দ, রাইফা ফাতেমা,ফাতেমাতুজ জোহরা তিথি, অন্বেষা অর্থ, মেজবাহ বিশ্বাস, শ্রমণা শ্রাবস্তী, মুসলিমা আনজুম সূচনা, সমন্বিত বর্ধন ভূমি, সানজিদা সনকা, বর্ণমালা রাই, শামীম শেখ, সমাদৃতা প্রহর, দি রেইন, আফিয়া ইবনাত অমিয়া, সৈয়দা সালমা নাসরিন, আলিয়া ফারহাৎ, সৈয়দা সালমা শিরিন, মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, আদিত্য সামির ও নুসরাত জাহান অনন্যা।
গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৩৬টি নাট্যদল এবং ভারতের চারটি দলসহ আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য, পথনাটকের ১২১টি সংগঠনের প্রায় চার হাজার শিল্পী অংশ নিচ্ছেন।
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল ও সংগীত আবৃত্তি ও নৃত্য মিলনায়তন এবং বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চনাটক, পথনাটক, আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য, মূকাভিনয়ের আয়োজন থাকছে প্রতিদিন। উৎসব চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।