হোটেলে কাজ দেয়ার নাম করে বাংলাদেশ থেকে ৪ ব্যক্তিকে নিয়ে ‘দাস’ হিসেবে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্কটল্যান্ডের এক হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে। প্রতিদিন তাদের ২২ ঘন্টা করে কাজ করতে হতো বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন আজাদ নামে এক ভুক্তভোগী। অভিযুক্ত হোটেল মালিক সামসুল আরেফিন স্কল্যান্ডের পর্যটন শহর আপিনের স্টুয়ার্ট হোটেলের মালিক।
বাংলাদেশ থেকে ৪ জন শ্রমিককে পাচারের দায়ে ২০১৫ সালে সামসুল আরেফিনের তিন বছর জেল হয়। পুলিশ জানায়, শ্রমিকদের দুরাবস্থার প্রতি অর্থলোভী সামসুল আরেফিনের কোন শ্রদ্ধা নেই। ২০০৮-২০১০ সালের মধ্যে হোটেলের মালিক হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। সিএনএন এর বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।
ভুক্তভোগী আজাদ সম্প্রতি সিএনএনকে জানান, ঢাকায় তার পারিবারিক হোটেল ব্যবসা ছিল। তিনি সেখানে প্রধান বাবুর্চী ছিলেন। ২০০৮ সালে হোটেল বিক্রি করে মোট ৪ জন স্কল্যান্ডে যান। সেখানে উচ্চ বেতনে কাজ দেয়ার কথা বলে তাদের নেয়া হয়। কিন্তু পরে তাদের খুব কম বেতনে অমানুষিক পরিশ্রম করানো হয়। এছাড়া সামসুল আরেফিন ভিসা বাবদ তাদের কাছ থেকে আবারো টাকা নেন।বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখান। তাদের সঙ্গে চাকরের মতো আচরন করেন। ভিসার জন্য স্ত্রীর গহনা এবং পিতার জমি বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করেন আজাদ।
পরে তারা স্থানীয় দাতব্য সংস্থার সহায়তা চান। ওই সংস্থা তাদের অভিবসান নিয়ে কাজ করা এনজিও মাইগ্রান হেল্প’র সহায়তায় ইংল্যান্ডে পাঠায়।
ওই সময় মাইগ্রান হেল্পে কাজ করা এক কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ২০০৯ সালে ওই ব্যক্তিরা প্রথমে তাদের নজরে আসেন। হোটেল মালিককে তারা অনেক টাকা দিয়েছেন, কিন্তু তাদের প্রকৃত বেতন দেয়া হয়নি। এছাড়া তাদের দিয়ে অকে নিম্নমানের কাজ করানো হতো, এমনকি দিনে ২২ ঘণ্টা করেও কাজ করানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেখানে সম্ভবত ১২ জনের মতো লোক কাজ করেন, কিন্তু বাকীরা তাদের সহায়তা চাননি।
তিনি বলেন, সামসুল আরেফিনের বিরুদ্ধে অপরাধ তদন্তের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার শর্তে ওই চারজন ইংল্যান্ডে সাময়িকভাবে কাজের অনুমতি পান। কিন্তু এখন তাদের বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার পরিস্থিতির মুখোমুখী হতে হচ্ছে।
কিন্তু তারা বর্তমানে ইংল্যান্ডে থাকার এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আজাদ বলেন, দেশ ফিরলে তাকে মৃত্যুর মুখোমুখী হতে হবে।