ম্যাচে হেরেছে তার দল। তবুও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের বিপক্ষে ম্যাচটাকে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নিজের সেরা ম্যাচ বলছেন জেমি ডে। আর তার শিষ্য জামাল ভূঁইয়া পুড়ছেন দারুণ দুই সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপে। লাল-সবুজ অধিনায়কের মতে, তার নিজের শটগুলো লক্ষ্য খুঁজে পেলে ফলটা এমন নাও হতে পারতো!
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে কাতারের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ফল আসলে বোঝাতে পারবে না এই ম্যাচে কতটা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেছে স্বাগতিকরা।
নিজেদের ভেজা আর ভারী মাঠে র্যাঙ্কিংয়ে ৬২ নম্বর স্থানে থাকা কাতারকে কঠিনভাবেই চেপে ধরেছিল ১২৫ ধাপ পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ। ২৮ মিনিটে প্রথম গোল হজম করা স্বাগতিকরা বাকি সময়টুকু গোল শোধে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছে। ৪৩ মিনিটে পরপর তিনবার গোললাইন থেকে কাতারের খেলোয়াড়দের গায়ে লেগে বল না ফিরলে প্রথমার্ধেই পাল্টে যেতে পারত ম্যাচের চিত্র।
পরে ৭৪ মিনিটে জামাল ভূঁইয়াকে গোল করতে দেননি কাতারি ডিফেন্ডার। লক্ষ্য বরাবর বাংলাদেশ অধিনায়কের শট হেড করে কোনরকমে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরের মিনিটে মাহাবুবুর রহমান সুফিলের আরেকটি শট ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক।
আগামী বিশ্বকাপের স্বাগতিক ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের বিপক্ষে এভাবে সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় নিজেদের অভাগাই মানছেন জামাল, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব হতাশ। আমরা বড় বড় সুযোগ পেয়েছিলাম। আমার নিজেরই দুটো সুযোগ ছিল। দুবার বল লাইন থেকে বিপদমুক্ত করা হয়েছে। আমরা যে সুযোগগুলো পেয়েছি কাতার মোটেও তা পায়নি। আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাতার দুই গোল নিয়ে গেছে।’
শিষ্যদের এমন পরিশ্রম মুগ্ধ করেছে কোচ জেমি ডেকে। টানা ৯০ মিনিট লড়াই করে যাওয়ার মানসিকতা ভবিষ্যতে বজায় রাখতে পারলে ফল তুলে নিতে বেশি সময় লাগবে না বলেই বিশ্বাস তার।
‘আমরা জানতাম খেলাটা কঠিন হবে। কাতার দারুণ কঠিন এক প্রতিপক্ষ। কিন্তু ছেলেরা যেভাবে খেলেছে তা আমার প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গেছে। আমার চোখে ওরা ছিল অসাধারণ। অনুশীলনের প্রথমদিন থেকেই ওরা কঠোর পরিশ্রম করেছে। যা পরিকল্পনা ছিল সেটা করে দেখিয়েছে। গোল পেলে হয়তো ভালোই হতো। তবে সত্যিই আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে সন্তুষ্ট।’
২০১৮ সালে দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে লড়াইয়ের মানসিকতা ঢুকিয়ে দিয়েছেন জেমি। তার অধীনে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দলগুলোর সঙ্গে জেতার অভ্যাস গড়ে তুলেছে লাল-সবুজরা। বৃহস্পতিবার ভাগ্য প্রসন্ন থাকলে হয়তো ১২৫ ধাপ এগিয়ে থাকা কাতারের সঙ্গে ড্র কিংবা জয়ও পেতে পারতো তার দল। সবদিক বিবেচনায় বাংলাদেশকে কোচিং করানোর মধ্যে এই ম্যাচকেই এগিয়ে রাখছেন ব্রিটিশ কোচ।
‘আমার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এটাই বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স। পুরো ৯০ মিনিট আমরা ম্যাচটাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। ছেলেরা যে খেলা দেখিয়েছে তাতে প্রমাণ হচ্ছে সামনে আরও দারুণ সব ফল হবে। পরের খেলাতেও আমরা এই ধারা বজায় রাখতে চাই।’
কাতার ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস পরের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে দেখানোর সুযোগ থাকছে বাংলাদেশের সামনে। ১৫ অক্টোবর বাছাইপর্বে কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ভারতের সঙ্গে ম্যাচ লাল-সবুজদের। সেজন্য শুক্রবার সকাল ১০টায় দেশ ছাড়বেন জামাল-সুফিলরা।