অবশেষে ঋণের ওপর সিঙ্গেল ডিজিট সুদ হারের পথে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত। পরীক্ষিত এবং নিয়মিত গ্রাহকদের ইতোমধ্যে ৯ শতাংশে এমনকি এর চেয়েও কম হারে ঋণ দেওয়া শুরু করেছে ব্যাংকগুলো। ঋণ পুনঃতফশিল করার নিয়ম একটু সহজ করা এবং আমানতের সুদের হার কমাতে পারায় কম সুদে ঋণ দেয়া সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। তবে, এই অসাধ্য সাধনের পরও বিনিয়োগ কাংখিত হারে না বৃদ্ধি হওয়াটা অস্বাভাবিক ঠেকছে তাদের কাছে।
খুব বেশিদিন নয়, ব্যাংকগুলো রীতিমতো কাড়াকাড়ি করে আমানত নিতো, ঋণ দিতো গড়ে ১৩ থেকে ১৮ শতাংশ সুদে। ক্ষেত্রবিশেষে এর চেয়ে বেশি সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হতেন উদ্যোক্তারা। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অর্থমন্ত্রী, রাষ্ট্রের সবার দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তারা, সুদের হার একটু যদি কমে সেই আশায়।
অর্থমন্ত্রী একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, সুদের হার কমানোর কোনো ম্যাজিক নেই তার হতে। আরো বলেছিলেন, বেসরকারী ব্যাংকের উদ্যোক্তারাই যেহেতু শিল্পপতি, চাইলে তারাই কম সুদে আমানত নিয়ে কম হারে ঋণের ব্যবস্থা করতে পারেন। শেষ পর্যন্ত সুদের হার কমেছে।
কারণ হিসেবে অবশ্য ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের সহিংসতা, অনিশ্চয়তার ফলে বিনিয়োগ স্থবিরতায় ব্যাংকের আমানতের পাহাড় জমতে থাকা একটা বড় ভুমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
সোনালি ব্যাংক সিইও প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন , সিঙ্গেল ডিজিটে আমাদের একটা গ্রাহকের বড় অংশকে ঋণ দিয়েছি, প্রায় সাড়ে সাতশ কোটি টাকা দিয়েছি।
সুদের হার কম, তার অর্থ এই নয় যে ব্যাংকে গ্রাহকের ভাটা পড়েছে, বরং এই সুযোগে অনেক অযোগ্যরা উদ্যোক্তা বনে যেতে চাইছেন। তাই সতর্ক আছেন ব্যাংকাররা।
রূপালী ব্যাংকের সিইও এম ফরিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৪ শতাংশের বেশি কোন ব্যাংকের ঋণের সুদের হার হতে পারবে না। রিবেট আগেও ছিলো রিবেট এখনো আছে, সেটার হিসাবে যখন করা হবে দেখা যাবে এটা বছর শেষে সিংগেল ডিজিটে চলে আসবে।
ভালো উদ্যোক্তর আশায় রয়েছেন ব্যাংকাররা, বিনিয়োগ ঘুড়ে দাড়াবে শিগগিরই।
এসআইবিএল ব্যাংকের সিইও শফিকুর রহমান বলেন, জটিল একটা পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে ব্যবসায়ী মহল একটা অনিশ্চিয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই যে আস্থার একটা সংকট এটা যদি কাটানো যায় বা আমরা যদি কাটিয়ে দিতে পারি তবে দেশের এ পরিস্থিতি থাকবে না।
সুদের হার কমতে কমতে এমন জায়গায় নেমেছে যে বড় ব্যাংকগুলো গ্রাহক টানতে সিঙ্গেল ডিজিটে হোম লোনসহ কিছু কিছু কনজিউমার লোন দেয়ার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে গণমাধ্যমে।