ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় বাংলা নববর্ষ-১৪২৪ বরণ করেছে রাজধানীসহ সারাদেশের স্কুলগুলো। বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বৈশাখ বরণে ছিল বাঙালি লোকজ সংস্কৃতির বিভিন্ন পরিবেশনা।
শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বর্ষবরণের আয়োজনের মধ্যে ছিল লোকজ গান, দেশীয় নৃত্য, বৈশাখী মেলা, যেমন খুশি তেমন সাজো ইত্যাদি। বাঙালির লোকজ ঐতিহ্য তুলে ধরে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে কোন কোন স্কুল।
অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পর সকল অশুভকে দূর করে, সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ এবং জাতিগত সব ধরনের বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে আড়ম্বরপূর্ণভাবে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। স্কুল-কলেজগুলোতে বিরাজ করে সাজসাজ রব।
গত ১৬ মার্চ আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।
মাউশি’র সহকারী পরিচালক (এইচআরএম) আশেকুল হক স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, বাংলা নববর্ষ ১৪২৪ আয়োজন উপলক্ষে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পয়লা বৈশাখে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও আড়ম্বরের সঙ্গে বাংলা বর্ষবরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্বঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি উল্লেখ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুরোধ করা হয় ওই নির্দেশনায়।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোতে এবার বর্ষবরণে আয়োজন করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
গোপালগঞ্জের বাটিকামারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রথম সকালেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বড় আকারে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী চলছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সন্ধ্যায় থাকবে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় লোকগানের আসর।
নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধারণ করে জাতীয় উৎসবগুলো আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করলেই তা মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে জবাব বলে মন্তব্য করে এ অধ্যক্ষ বলেন: যতদিন পয়লা বৈশাখ থাকবে, একুশ থাকবে, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস থাকবে ততদিন মৌলবাদী শক্তি জেঁকে বসতে পারবে না।
রাজধানীর বেসরকারি রায়হান স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ রহিমা আফরোজ তাদের বৈশাখ আয়োজন সম্পর্কে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমাদের আয়োজন ছিল বৈশাখী সাজ প্রতিযোগিতা, বাংলার গান, বৈশাখী স্লোগান লেখা, শিক্ষকদের বক্তৃতা, গান এবং অভিভাবকদের শুভেচ্ছাবক্তব্য।
বর্ষবরণের আয়োজন নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন সুলতানা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা এবার বৃহৎ পরিসরে পয়লা বৈশাখ উদযাপনের পরিকল্পনা করছি। মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ মেয়েরা স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজন করবে বৈশাখী মেলা। সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও থাকবে।
এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশে পয়লা বৈশাখ উদযাপনের খবর পাওয়া গেছে।