জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিমান বাহিনীর এক বিদ্রোহের ঘটনায় সামরিক আদালতের দেওয়া দণ্ডের ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিট শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে আদালত রিটটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে রিটের পক্ষের আইনজীবী মতিউর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আদালতে আজ রিটটি আমি উপস্থাপনের পর আদালত এটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। আগামীকাল বিষয়টি কার্যতালিকায় আসলে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এর আগে গত ২৯ এপ্রিল হাইকোর্টে এ রিটটি করা হয়। জিয়ার আমলের সেই সামরিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের সন্তানসহ ৮৮ জন রিটটি করেন।
এ রিট আবেদনে ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সামরিক আদালতে দণ্ডিতদের চাকরির স্বাভাবিক অবসর গ্রহণ পর্যন্ত বেতন, অন্য সব সুবিধা, পেনশন দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিমান বাহিনীর প্রধানকে রিটে বিবাদি করা হয়েছে।
রিটের বিষয়ে আইনজীবী মতিউর রহমান জানান: জেনারেল জিয়াউর রহমানের ‘মার্শাল ল ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৭’ এর অধীনে সামরিক আদালতে অবৈধ দণ্ড এবং সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সেই অবৈধ দণ্ডাদেশের সময় থেকে চাকরির স্বাভাবিক অবসরের সময় পর্যন্ত পদ-পদবী অনুযায়ী তাদের চাকরির সমস্ত বকেয়া বেতন ও অন্যান্য সকল সুবিধাসহ পেনশন না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা অনুযায়ী কেন সরকারি চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, রিটে এ মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।
এবং ‘ওই সামরিক আদালতের বিচারে বেআইনিভাবে যাদের সাজা দেওয়া হয়েছিল, তাদের যেন এই সাজা থেকে মাফ করে দেওয়া হয় এবং যারা মারা গেছেন তাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পোষ্যদের যাতে সরকারি চাকরিতে অ্যাকোমোডেট করা হয় সেই বিষয়টি রিটে চাওয়া হয়েছে’।
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ভোররাতে বিমান বাহিনীতে সংঘটিত বিদ্রোহের পর সামরিক আদালতের রায়ে বিমান বাহিনীর ৫৬১ জন এবং অন্যান্য বাহিনীর ১১৮৩ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এছাড়া অফিসারসহ বিভিন্ন পদের কয়েক শত জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
সেই সাথে আরো প্রায় চার হাজার জনকে বরখাস্ত ও চাকরিচ্যুত করা হয় বলে জানান রিটের পক্ষের আইনজীবী।