অন্তঃস্বত্ত্বা সাবেক প্রেমিকার চায়ের কাপে লুকিয়ে গর্ভপাত করানোর ট্যাবলেট মেশানোর দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি’র এক চিকিৎসককে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ওই ওষুধ মেশানো চা পান করার পর ব্রুক ফিস্ক নামের ওই নারীর গর্ভের সন্তানটি মারা যায়।
আসামী সিকান্দার ইমরান ওয়াশিংটনের মেডস্টার জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি হসপিটালের চিকিৎসক ছিলেন। মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রথম এক বিচারক তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। ভ্রুণ হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনে সর্বোচ্চ সাজা ৪০ বছরের জেল।
কিন্তু ব্রুক তখন ওই বিচারকের কাছে ইমরানের জন্য তুলনামূলক লঘুদণ্ডের আবেদন করলে আদালত ইমরানকে শুক্রবার তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বলে জানায় এবিসি। কারণ হিসেবে ব্রুক জানান, তিনি চান ইমরান তার ভুলের শাস্তি ভোগ করার পরও নতুনভাবে জীবন শুরু করার সুযোগ পান।
এনডিটিভি জানিয়েছে, গত জুনে ইমরানের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অন্যের ভ্রুণ হত্যা এবং অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়। অনলাইন নথিপত্র অনুসারে, জুনের পর নভেম্বরে আবার তার বিরুদ্ধে খাবার, পানীয় ও ওষুধ বদলের মামলা হয়।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইমরান ভ্রুণ হত্যার অপরাধ স্বীকার করেন।
ডব্লিউআরওসি’কে ব্রুক জানান, ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে প্রায় তিন বছরের সম্পর্ক ছিল ইমরান ও ব্রুকের। এরপর সম্পর্ক চুকিয়ে ইমরান ইউইয়র্কের রচেস্টার থেকে ওয়াশিংটনে চলে যান নতুন চাকরি নিয়ে। এর মাঝেই ব্রুক জানতে পারেন তিনি মা হতে যাচ্ছেন।
বিষয়টি জানালে ইমরান জানান, সন্তান চান না তিনি। তাই ব্রুককে গর্ভপাতের জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করতে থাকেন।
কিন্তু ব্রুক রাজি না হয়ে গত বছরের ১৭ মে ভার্জিনিয়ার আরলিংটনে ইমরানের সাথে দেখা করতে যান সন্তান লালনপালনের ব্যাপারে আলোচনা করতে। তখনই লুকিয়ে ব্রুকের চায়ের কাপে প্রসব প্রক্রিয়া দ্রুত করতে ব্যবহৃত একটি ট্যাবলেট মিশিয়ে দেন ইমরান।
সন্ধ্যায় চা পানের শেষ পর্যায়ে তিনি কাপের নিচে গুঁড়ো গুঁড়ো বস্তু দেখে বুঝতে পারেন সেটি ট্যাবলেট জাতীয় কিছু ছিল। এর কয়েক ঘণ্টা পরই তীব্র ব্যথা নিয়ে ভার্জিনিয়া হসপিটাল সেন্টারে হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই সন্তানকে হারান ১৭ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্ত্বা ব্রুক ফিস্ক।