বিদেশফেরত দুই ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলাকে ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
রোববার প্রথমে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘লকডাউনে’র ঘোষণা দেয় হলেও পরে জানানো হয়, শুধুমাত্র করোনো ভাইরাসে আক্রান্ত থাকতে পারে- এমন সন্দেহভাজন পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে।
বিষয়টি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেন সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.নবীনেওয়াজ।
তিনি বলেন, গাইবান্ধা জেলাধীন সাদুল্লাপুর উপজেলার ৯ নং বনগ্রাম ইউনিয়নের হবিবুল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজল মণ্ডলের বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে তাদের আমেরিকা প্রবাসী দুই আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন। তাদের দুজনই করোনা পজিটিভ বলে শনাক্ত হয়েছেন।
পরবর্তীতে ২১ মার্চ গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা অংসখ্য লোক ভোট প্রদান করেছেন বলে জানা গেছে।
ফলে সাদুল্লাপুরে করোনা ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণ ঘটতে পারে বলে আশংকা করা যাচ্ছে। ফলে ওই সন্দেহভাজন পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
লকডাউনের বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন: লকডাউন করার বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রশাসন গ্রহণ করবে।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান দেশের কিছু এলাকায় লক ডাউন করা হতে পারে।
করোনার বিস্তার রোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের ১১টি স্থল বন্দর দিয়ে বিদেশী নাগরিকদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশে নতুন করে আরো তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন নারী, দুজন পুরুষ। আক্রান্তদের মধ্যে দুজন বিদেশফেরত।
এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭ জন। মারা গেছেন দু’জন। সুস্থ হয়ে পাঁচজন বাড়ি ফিরেছেন। এদের মধ্যে দুজন আজ ঘরে ফিরবেন। আর ২০ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ৪৩ জন।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। এতে এতে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ১৪ হাজার একজন জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৩ হাজার ৫৪৮ জনের। এছাড়াও চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৫ হাজার ৮৭৪ জন।