জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকায় উদযাপন হচ্ছে দুই দিনব্যাপী সাকরাইন উৎসবের শেষ দিন। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে এই উৎসব পালন করা হচ্ছে বেশিরভাগ ছাদে। চলবে গভীর রাত পর্যন্ত।
পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া, নারিন্দা, বংশাল, টিকাটুলি এলাকার প্রতিটি বাড়ি ছাদে বিকেল থেকে শুরু হয় ঘুড়ি উড়ানো। দিনের আলো কমে সন্ধ্যা নামলে ঘুড়ির জায়গা দখল করে নেয় আলোর ঝলকানি। উড়ানো হয় ফানুস।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় উচ্চ স্বরের গান। অনেকে গানের তালে তালে ড্রাগনের মতো মুখ দিয়ে অবিরাম বের করছেন আগুন। কারও ছাদ থেকে আকাশে উড়ে যায় তীক্ষ্ণ আলো। তারপর আতশবাজি ফুটতে থাকে তারার মতো।
সূত্রাপুরের পিসি ব্যানার্জি লেনের প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদে দেখা যায় এই চিত্র। একটি ছাদের আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অভিক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, উৎসবটা আমরা পেয়েছি বাবাদের থেকে। বাবারা পেয়েছেন দাদাদের থেকে। সাকরাইন উৎসবে আনন্দ করা আমাদের ঐতিহ্য। দূর সম্পর্কের বন্ধুদের সাথেও দেখা হয় এই উৎসবের বদৌলতে। সাকরাইন আমাদের প্রাণের উৎসব।
সুত্রাপুরের পিসি ব্যানারজি লেনের আরেকটি বাসার ছাদে দেখা যায় উচ্চস্বরে বাজছে ডানা কাটা পরী, ঢাকার পোলা, তুই লোকাল বাসসহ উচ্চ বিটের সব গান। গানের তালে তালে নাচছেন দেড় দুইশ ছেলে-মেয়ে।
এই ছাদে সাকরাইন আয়োজন করেছেন প্রিন্স বাবু। তিনি জানান, আমরা এই উৎসব প্রতিবছর পালন করে থাকি। সারাদিন ঘুড়ি উড়ানো হয়, আর সন্ধ্যার পর শুরু হয় আতশবাজি আর গান বাজানো। এটা সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় মধ্য রাতে। আগে ঘুড়ি উড়ানোরর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সময়ের বিবর্তনে এখন এটা গান আর আতশবাজির পর্যন্ত চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, দিনের বেলায় কালাপাহাড়, চোখদার, চুমকিদার, সাপঘুড়ি, ড্রাগনঘুড়ি,লেজদার, লালপাহাড়, মালাদারসহ দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ঘুড়ি উড়ানো হয়।