সাংবাদিকদের প্রতি ক্রমাগত বিষোদগার করেই যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প। গতকাল বুধবারও হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের এক আক্রমণাত্মক ও এলোমেলো সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সফরত ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সোলি নিনিস্টকে নিয়ে ট্রাম্প সংবাদ সম্মেলন করছিলেন। এই সময় সাংবাদিকরা চলমান বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
৪০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট নানা বিষয়ে কথা বলেন। এরপর শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। এসময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নে বিরক্ত হয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ট্রাম্প।
সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে লক্ষ্য করে ট্রাম্প বলেন, আপনি যেসব গণমাধ্যমের ব্যাপক প্রশংসা করলেন ও চিত্তাকর্ষক বলছেন, তাদের অবস্থা দেখুন? আপনি কি বিশ্বাস করতে পারছেন?
এর আগে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি আমেরিকার গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনটি শেষ হয় সাংবাদিকদের বিপক্ষে তীব্র বিষোদগার ও কথার বাণ বিদ্ধ করার মাধ্যমে।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে বলেছেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত লোক’ যারা আমেরিকার গণতন্ত্রের ধ্বংস করার চেষ্টা করে সবসময়।
তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমগুলো যদি সরল, সৎ এবং স্পষ্ট হতো তাহলে আমরা আরও অনেক বড় জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারতম।
ট্রাম্পকে ২৫ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডিন্টের সঙ্গে ফোনালাপ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রয়টার্সের সাংবাদিক জেফ ম্যাসনের ওপরে।
ওই টেলিফোন আলাপে ডেমোক্র্যাট দল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে চাওয়া জো বাইডেন এবং তার ছেলের ব্যাপারে তদন্তের জন্য মি. ট্রাম্প চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর মার্কিন কংগ্রেসে ইমপিচমেন্ট তদন্ত শুরু করেছে ডেমোক্র্যাটরা।
ট্রাম্প তখন রয়টার্সের সাংবাদিককে কড়া ভাষায় বলেন, তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলছো? আমাকে কি শুনতে পাচ্ছো? অভদ্র হবে না। আমি সবকিছুর উত্তর দিয়েছি।
ম্যাসনের প্রশ্ন ছিলো, প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন বিষয়ে কি বলবেন এবং কী করতে চাচ্ছেন? তখন ট্রাম্প সেই প্রশ্ন সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাকে বলেন, এখানে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সোলি নিনিস্টকে আছেন। তাকে এবার প্রশ্ন করো।
ট্রাম্প সাংবাদিক ম্যাসনকে লক্ষ্য করে বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে পুরো প্রতারণা এবং তুমি জানো যে এই প্রতারণার মধ্যে কে খেলছে। তোমার মতো লোকেরাই এবং আমাদের দেশের এই ভুয়া গণমাধ্যম রয়েছে’।
ট্রাম্প একসময় বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এমন আচরণ পাচ্ছি। এসব নিয়েই বেঁচে আছি। এতে আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমার কাছে এটি সকালে কোর্ট-টাই পরার মতোই’। এই অবস্থায় আমি তিন বছর বাস করছি।
তিনি নিজেকে যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হিসেবে উপস্থাপন করে গণমাধ্যমকে ‘রক্ষণশীল’ বলে সমালোচনাও করেন।
৪০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে ১৭ মিনিট ওভাল অফিসে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, মার্কিন গণতন্ত্রের মহাত্ম্য সম্পর্কে আমি অবগত। গণতন্ত্র অসাধারণ ও চিত্তাকর্ষক।