সড়ক দুর্ঘটনার কবল থেকে বেঁচে ফিরেছেন এই সময়ের আলোচিত অভিনেতা খায়রুল বাসার। ২৭ আগস্ট মধ্যরাতে তিনিসহ আরও চারজন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। সেদিনের পর থেকে হাসপাতালের বিছানায় দিন কাটছে খায়রুল বাসারের। তবে বর্তমানে তিনি অনেকটাই সুস্থ। শনিবার রাতে মুঠোফোনে খায়রুল বাসারের সাথে যখন আলাপ হচ্ছিল, হাসপাতাল থেকে তিনি জানাচ্ছিলেন- রবিবার হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন ময়মনসিংহ নিজের বাড়িতে। সেই আলাপের বিশেষ অংশ তুলে ধরা হলো:
শারীরিক অবস্থা কেমন?
শরীর অনেকটা ভালো। ব্যথা কমে গেছে। কলারবোন ভেঙেছে। ওটা জোড়া লাগতে মাসখানেক সময় লাগবে। এছাড়া তেমন সমস্যা নেই। রবিবার হাসপাতাল ছাড়ছি। সরাসরি ময়মনসিংহ গ্রামের বাড়িতে যাবো। ওখানে আমার সবাই থাকেন। একমাস বিশ্রামে থাকতে হবে। এই সময়টা পরিবারের সঙ্গে থাকতে চাই। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া তিনি বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আত্মীয় শুভাকাঙ্ক্ষী মিডিয়ার অনেকেই দেখতে এসেছেন। এটা আমার অনেক ভালো লেগেছে। তখনই অনুভব করেছি আমরা সত্যি একটি পরিবার। পরিবারের সবাই সবাইকে নিয়ে ভাবে। সবসময় মানুষের দোয়া পেয়েছি। আমাকে যারা সাপোর্ট করে আসছেন। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। সামনে তাদের জন্য আরও ভালো ভালো কাজের চেষ্টা করবো।
এত বড় দুর্ঘটনার শিকার হলেন, মানসিক ট্রমা কেটেছে?
শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা ছিল। ট্রমা না ভেবে ইতিবাচকভাবে ভাবি, আল্লাহ বাঁচিয়ে দিয়েছেন এটাই শুকরিয়া। ভালো ভাবে বাঁচবার ও কাজ করবার সুযোগ আরও একবার পেয়েছি। হাজার হাজার মানুষ আমার এবং আমাদের জন্য দোয়া করেছেন। সেই দোয়াতেই হয়তো কোনো ট্রমা অনুভব করিনি। যে কদিন হাসপাতালে আছি, মনে হয়েছে আগের মতো সবার সঙ্গে ছিলাম। সবাই সাথে আছে।
‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ কনটেন্টটি বেশ আলোচিত হয়েছে। যখনই দর্শকদের আগ্রহের তুঙ্গে তখনই আপনাদের টিমের চারজনের দুর্ঘটনা! ফলে সেই আনন্দ কি কিছুটা মাটি হয়ে গেল…? ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ একটি অনুভূতির গল্প। কাজটি দেখার সময় আমি আমার বন্ধুদের মিস করেছি। যারা দেখেছে প্রত্যেকেই তাদের নিজেদের কোথাও না কোথাও মিল পেয়েছে। তাই আমাদের চেয়ে দর্শক নিজেরাই কাজটি নিয়ে উদযাপন করেছেন। দুর্ঘটনার জন্য কাজটির সাফল্য মাটি হলো তেমনটি নয়। মানুষ কাজটি দেখে এতো পছন্দ করেছেন আমাদের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন সেই দোয়াতেই হয়তো আমরা রক্ষা পেয়েছি।
সেদিন রাতের ঘটনা আপনার বয়ানে জানতে চাই?
সেদিন রাতে গুলশানের পিৎজা হাট ও চরকির সঙ্গে একটা ক্যাম্পেইন ছিল। শেষ হয় সাড়ে এগারোটার দিকে। এজন্য আমরা সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলাম। পরে কাজটির সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন গেট টুগেদারে। ক্যাম্পেইন শেষ করে আমাদের সবার সঙ্গে আড্ডা হয়েছিল। পরে ডিনার ছিল। ডিনার করে বের হতে হতে আড়াইটা বেজে যায়। বের হয়ে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। যে কোনো দুর্ঘটনা কখনও আগে থেকে বলে আসে না। এটাকে শ্রেফ দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখি। আমরা সবাই বেঁচে ফিরেছি এটাই শুকরিয়া।
ছবি: খায়রুল বাসারের ফেসবুক থেকে সংগৃহিত