জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের জন্য গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু’র সঙ্গে ফোনালাপের পর কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘কয়েকটি কাগজে দেখলাম, আমরা নাকি খাবারের মেনু নিয়ে আলোচনা করেছি। প্লিজ, এসব আপনাদের (সাংবাদিক) অ্যাভয়েড করা উচিত। সংলাপ সিরিয়াস বিষয়, হালকা বিষয়গুলো না আসাই ভালো।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের করতে গিয়ে এ কথা বলেন কাদের।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি সংলাপের ব্যাপারে গতরাতে গণফোরাম সেক্রেটারি মোস্তফা মহসিন মন্টুর সঙ্গে ফোনে আলাপ করেছি। কোনো কোনো পত্রিকায় দেখতে পেলাম আমি নাকি ১০ জনের নাম তার কাছে প্রস্তাব করেছি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমি কারো নাম প্রস্তাব করিনি।’
‘‘মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আমি জিজ্ঞেস করেছি, আপনারা কতজন আসতে চান? তিনি আমাকে বলেছেন, তারা ১৫ জন আসতে চান। আমি বললাম ১৫ জন কেন ২০-২৫ জনও আসতে পারেন, মোস্ট ওয়েলকাম।’’
এসব কথাই অন্যভাবে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আবার কোনো কোনো কাগজে দেখলাম, আমি নাকি খাবারের মেনু নিয়ে আলোচনা করেছি। এই সব হালকা বিষয়গুলো প্লিজ আপনাদের অ্যাভয়েড করা উচিত। এটা একটা সিরিয়াস বিষয়। এখানে এমন হালকা বিষয় না আসাই ভাল।’
এ সময় সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান – ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কারা কারা সংলাপে আসছেন, তার কোনো তালিকা পৌঁছেছে কি না?
জবাবে তিনি বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে কারা কারা অংশগ্রহণ করবে তার একটি তালিকা আজকেই আওয়ামী লীগ পার্টি অফিসে পাঠানো হবে। এটা মন্টু সাহেব আমাকে জানিয়েছেন।’
অবশ্য ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের পক্ষে কারা কারা থাকছেন – তা নিয়ে কোনো ধারণা দেননি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক এ নেতা।
এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য; ‘তারা কত জন আসেন, আমরা দেখি। তাদের তালিকা দেখে, আমাদের কারা থাকবেন তা নির্ধারণ করবো।’
ঐক্যফ্রন্ট অাহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের আহ্বানে আওয়ামী লীগ সংলাপে বসলেও আওয়ামী লীগ এবং সরকারের আগের রাজনৈতিক অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন কাদের।
বলেন, ‘আমাদের দলের নেতারা এবং সরকার সবাই একই ভয়েসে কথা বলি। আমরা আমাদের পলিসি সরকার এবং দলের যা ছিল তাই রয়েছে। আমরা শিফট করিনি।’
কারও চাপের কাছে নতিস্বীকার করে নয় ড. কামাল হোসেনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপে বসতে রাজি হয়েছেন বলে আবারো উল্লেখ করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে তাদের দল সংলাপে বসবে।
ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সংলাপের জন্য কোনো পূর্বশর্তও নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যার দরজার কারও জন্য বন্ধ থাকে না। তাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এরই মধ্যে আগামী বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে গণভবনে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠিও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে রোববার নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে জাতীয় নির্বাচনসহ ঘোষিত ৭ দফা দাবি ও ১১টি লক্ষ্য সম্বলিত একটি চিঠিআওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে পৌঁছে দেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার কাছে দেয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে সংলাপের আহ্বান জানানো হয়।
গত ১৩ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপিসহ চারটি দলের সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করে।