লেখাপড়া নিয়ে বাবা-মায়েদের প্রতিযোগিতা না করে শিশুদের কাছে শিক্ষাকে সহজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনোভাবেই যেন শিশুদের ওপর পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ দেয়া না হয়। এটি একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষাই একটি শিশুর শিক্ষার ভিত্তি তৈরি করে। আমরা আমাদের দেশে প্রি-প্রাইমারি শুরু করেছি। তারপর প্রাইমারিকে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। শিশুদের পড়াশোনার জন্য খুব বেশি চাপ দেয়া ঠিক না। পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে যেখানে সাত বছর বয়সের আগে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠায় না। কিন্তু আমাদের দেশে বাচ্চারা অনেক ছোটবেলা থেকে স্কুলে যায়।
তারা যেন খেলতে খেলতে, হাসতে হাসতে, সুন্দরভাবে নিজের মতো করে পড়াশোনা করতে পারে সেই ব্যবস্থাটাই করা উচিত। সেখানে বারবার পড় পড় করলে, ধমক দিলে বা আরও বেশি চাপ দিলে শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহ কমে যাবে। একটা ভীতি সৃষ্টি হবে। সেই ভীতি যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে আমি আমাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের অনুরোধ করব।’
‘অনেক সময় আমরা দেখি, লেখাপড়া নিয়ে প্রতিযোগিতা শিশুদের মধ্যে না হলেও তাদের মায়েদের মধ্যে এবং বাবাদের মধ্যেই একটু বেশি হয়ে যায়। এটা খুব অসুস্থ একটা প্রতিযোগিতা বলে আমি মনে করি। কারণ সব শিক্ষার্থীর তো সমান মেধা থাকবে না।’
তাই স্বভাবতভাবে যার যেদিকে আগ্রহ আসবে সেদিকে তাকে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী, যেন শিক্ষাকে সে আপন করে নিতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন প্রথম শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার জন্য শিশুদের ছাপানো প্রশ্নপত্র দেয়া হয়। ‘সে যদি ছাপানো প্রশ্নপত্র পড়তেই পারে তাহলে তার ক্লাস ওয়ানে পড়ার দরকার কী? তার তো স্কুলে ভর্তি হওয়ারই দরকার নেই।’
একে এক ধরনের মানসিক অত্যাচার উল্লেখ করে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রত্যেক শিশুর বয়স হতেই তাকে স্কুলে ভর্তি হবে। এটি তার অধিকার। তবে এক্ষেত্রে এলাকাভিত্তিক স্কুলে তার ভর্তি ও সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।