চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

শিশুটি আবার তার মা-বাবার মুখ দেখতে পারছে

এক বছর আগে চোখে ছানি পড়ায় মা-বাবার মুখসহ দুনিয়াটাই অন্ধকার ছিল শিশু আল্পনার কাছে। বাম চোখ অপারেশনের পর আবার দেখতে পাচ্ছে আল্পনা। বাবাকে দেখেই আবদার: বাবা-বাবা কাছে আসো।

আল্পনা হাঁসদা। বয়স মাত্র আড়াই বছর। বছরখানেক হলো চোখে ছানি পড়ে দু্ই চোখে সে কিছুই দেখতে পেতো না। ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে প্রায় এক মাস চিকিৎসা শেষে বাম চোখে সফল অস্ত্রোপচার হয়। ফলে এখন দেখতে পারছে আল্পনা।

প্রথম দফা চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার মা-বাবার কোলে চড়ে বাড়ির পথে রওনা হয়েছে সে। আরেক চোখে অপারেশনের জন্য আবার ঢাকায় আসবে সপ্তাহ দুয়েক পর।

মঙ্গলবার আল্পনার বাবা বেটকা হাঁসদা চ্যানেল আই অনলাইনকে  বলেন: আমার মেয়ে এখন দেখতে পাচ্ছে।চলতি মাসের ১৬ তারিখে আবার আরেক চোখের অপারেশন হবে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে আল্পনার মা মরিয়ম মুর্মুর বলেন: আমরা গরীব তাই ডাক্তার আমাকে অনেক টাকা মাফ করে দিছে।খুব অল্প টাকায় অপারেশন হয়েছে।

চোখের আলো ফিরে পাবার পর আল্পনার দিন কেমন কাটছে জানতে চাইলে মা মরিয়ম বলেন, নতুন করে সবাইকে দেখে ও খুশী।ছোটাছুটি করছে আর অনেক কথা বলছে।

ইসলামিয়া হাসাপাতালের চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালের শিশু বিভাগে প্রথম অপারেশন হয় আল্পনার।ডাক্তাররা রুটিন চেক আপ করার পর তাকে বাড়ি যেতে দেওয়া হয়।

চিকিৎসকরা বলছেন, আল্পনার অবস্থা এখন ভাল।১৪ থেকে ১৫ দিন পর তার আরেক চোখেও অপারেশন হবে।

মঙ্গলবার যখন আল্পনাকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে বেটকা ও মরিয়ম হাসপাতাল ছেড়ে যান তখন তাদের চোখে মুখে ছিল পরিতৃপ্তি আর আনন্দ অশ্রু। দিনমজুর গরীবদেরও যে কোন ঝামেলা ছাড়া সঠিক চিকিৎসা হয় সেটাই যেন বোঝাতে চাচ্ছিলেন তারা।

নওগাঁর পোরসা থানার দোয়াসদিঘি গ্রামের দিনমজুর বেটকা হাঁসদা আর মরিয়ম মুর্মুরের ছোট মেয়ে আল্পনা হাঁসদা। পরিবারে নুন আনতে পান্না ফুরায় অবস্থা। তাদের মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর সুযোগ ছিল না। পরবর্তীতে এলাকার সাঁওতাল ছেলে হৈমন্তসহ অন্যদের মাধ্যমে শিশু আল্পনার চিকিৎসার জন্য টাকা তুলে দেওয়া হয়।তাদের মাধ্যমেই রাজধানীর ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে আসে তারা।

চোখে অন্ধকার নিয়ে ঢাকায় এসেছিল আল্পনা, ফিরে গেছে চোখের আলোয়।

ছবি: রণ মাহমুদ