পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত বলছে, চিত্রনায়িকা শাবনূরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ্। তা নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
সালমান শাহ্ এর মামা, তার বাসার কাজের সহযোগী এবং পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ার সাক্ষ্যে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছে পিবিআই।
সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডির পিবিআই হেড কোয়ার্টার্সে এমন তথ্য জানান সংস্থাটির প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
পিবিআই প্রধান জানান, তদন্তের প্রয়োজনে যখন আমরা সালমানের বাসায় কাজের সহযোগী মনোয়ারা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি জানান, ‘‘সালমান শাবনূরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, সামিরা ও শাবনূরকে নিয়ে একসঙ্গে সংসার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সামিরা তাতে রাজি হন নি।’’
মনোয়ারা বেগম পিবিআইকে আরও জানান, ‘‘সালমানের মৃত্যুর আগের দিন রাতেও শাবনূরকে নিয়ে সামিরার সঙ্গে ঝগড়া হয়। ওই সময় শাবনূরকে ফোন করে সালমান বলেছিলেন, আর কখনো তাকে ফোন না দিতে।
তারপরই শাবনূরের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া সিটিসেল কোম্পানির ফোনটি ভেঙ্গে ফেলেন। এর আগে আরেকটি দামি উপহার (টেবিল ফ্যান) ভেঙ্গে ফেলেন সালমান।’’
মনোয়ারা বেগম পিবিআইকে জানান, ‘‘শাবনূর প্রায়ই বাসায় আসত, এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রায়ই সালমান-সামিরা ঝগড়া হতো। মাঝে মাঝে সামিরা রাগ করে চট্টগ্রাম চলে যেত।’’
সেসময় সালমানের পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া ইজ্জাতুন নেছা সুইটিকে জিজ্ঞাসাবাদেও এমন তথ্যই পেয়েছে পিবিআই।
সুইটি বলেছেন, ‘‘সালমান শাবনূরের অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে চাননি সামিরা। এই বিষয়গুলো নিয়ে সবসময়ই সংসারে ঝামেলা থাকত।’’
সালমানের ছোট মামা আলমগীর কুমকুম পিবিআইকে বলেছেন, ‘‘পারিবারিক অশান্তির কারণে স্ত্রী সামিরাকে তালাক দিতে চেয়েছিলেন প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ্। আমাকে ফোন করে সে বলে ‘আমি সামিরাকে তালাক দেব’।’’
আলমগীর কুমকুম আরও বলেছেন, ‘‘সালমান মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তার সন্তান হচ্ছিল না। সার্বিক বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেছিল। তিনি শাবনূরকে বিয়ে করে সংসার করতে চেয়েছিলেন।’’
সালমান শাহ্’র আত্মহত্যার কারণ হিসেবে সালমান শাহ্ ও চিত্রনায়িকা শাবনূরের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা, স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ, মাত্রাধিক আবেগ প্রবণতায় একাধিকবার আত্মঘাতী হওয়ার বা আত্মহত্যার চেষ্টা, মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা, জটিল সম্পের্কর বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জিভূত অভিমানে রূপ নেওয়া এবং সন্তান না হওয়াকে কেন্দ্র করে দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতার কথা উল্লেখ করেছে পিবিআই।