লেখক তার লেখার মধ্যে দিয়ে একটা জগত তৈরি করেন। পরে পাঠক সেই লেখা পড়তে গিয়ে ওই জগতে আসে। এখানেই লেখক আর পাঠকের পরিচয় হয়। সেখানে এসে যদি পাঠকের মনে হয় এতো আমারই জগত। এই জগতটাও আমার পরিচিত। তখনই সার্থকতা পায় লেখক। আর লেখক ও পাঠকের জগত এক হয়ে যায় ধীরে ধীরে।
এমনটাই ভাবেন লেখক গুলতেকিন খান। এবারের বইমেলায় বাজারে এসেছে তার লেখা কবিতার বই ‘আজো, কেউ হাঁটে অবিরাম’।
লিখতেন অনেক আগে। মাঝখানে অনেকটা সময় লেখালেখি বন্ধ। এরপরে এখন আবার পথচলা শুরু হলো লেখালেখি নিয়ে। আগামীতেও তাই লেখালেখিটা চালিয়ে যেতে চান। বলেন, আমার দাদা প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খানের অনুপ্রেরণাতেই মূলত লেখালেখি শুরু করেছিলাম। তারপরে অনেকটা সময় বিরতি। যখন আবার ফেসবুকে টুকটাক লেখালেখি শুরু করলাম তখন দেখি আমার বন্ধুরাই আমাকে উৎসাহিত করছে আরো বেশি লেখালেখি করতে।
স্কুলে পড়া অনেক বন্ধুকেই সময়ের কালচক্রে হারিয়ে ফেলেছিলেন গুলতেকিন খান। সামাজিক যোগাযোগের বদৌলতে আবার ফিরে পেয়েছেন অনেককে। তাদের কেউ এখন দেশেই থাকে আর কেউ দেশের বাইরে। ফেসবুকে লেখা কবিতাগুলো তাদের অনুপ্রেরণাতেই আরো বেশি প্রাণ পায়। তাদের ক্রমাগত উৎসাহ আর অনুপ্রেরণাতেই নতুন করে লেখার তাগিদ তৈরি হয় এই লেখকের মধ্যে।
লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে এই লেখকের। বলেন, কোনো একবার তাম্রলিপির প্রকাশকের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো। কথায় কথায় বলেছিলাম, বই লিখলে আপনাকেই দেবো। সেই থেকেই এবারের বইটির চূড়ান্ত রূপ। সামনেও আরো লেখালেখি করতে চাই কিন্তু কি লিখবো বা কোন ধরনের লেখা লিখবো সেসব নিয়ে এখনো কিছু ভাবিনি। বই লিখতে তো অনেক অনেক পড়াশোনা করতে হয়। সেটাই আপাতত চলছে। তবে এবার ভিন্ন কিছু নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।
‘আজো, কেউ হাঁটে অবিরাম’ বইটিতে পারিপার্শ্বিকতা, সমাজ, জীবন নিয়ে লেখা কবিতাগুলো তুলে ধরেছেন লেখক। কবিতা সম্পর্কে লেখকের বক্তব্য, আমার যখন যেটা মনে হয়েছে সেটাই লিখেছি। কোনো বাধাধরা বিষয়ের মধ্যে থাকিনি। আবার কবিতাগুলো সব্ ধরনের পাঠকের জন্যই লিখেছি। এবারের কবিতাগুলো ২০১৩-১৪ সালের মধ্যে লেখা।
লেখালেখির জগত যেন অন্য এক জগত। বই প্রকাশের পর ছেলেমেয়েদের কাছ থেকেও খুবই প্রশংসা শুনেছেন মা গুলতেকিন খান। বইটা হাতে পেয়ে ওদের খুশি দেখে আনন্দিত হয়েছেন তিনি। বলেন, ওরা কখনো ভাবতেই পারেনি এমন কিছু ঘটবে।
দেশের সাহিত্যকে দেশের বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুবাদের কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করেন এই লেখক।
তার মতে, আমাদের দেশেও অনেক ভালো ভালো সাহিত্যচর্চা হচ্ছে। সেসব সাহিত্য যদি আমরা দেশের বাইরে ছড়িয়ে দিতে চাই তাহলে অনুবাদ দরকার। তাহলে অন্য দেশের সাহিত্য যেমন আমরা পড়তে পেরেছি তেমনই আমোদের সাহিত্যও দেশের বাইরের মানুষ সহজেই পড়তে পারবেন।
গুলতেকিন খানের লেখা ‘আজো, কেউ হাঁটে অবিরাম’ বইটি প্রকাশ করেছে তাম্রলিপি। ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে বইটির দাম ১৩৫ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাম্রলিপির স্টলে।