লিফটের ভেতর এক মাস আটকে থাকার পর এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। চীনের গাওলিং জেলার জিয়ান এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
গত ৩০ জানুয়ারি ’উ নামের ওই নারী ভবনের লিফটে থাকা অবস্থায় দুই মেরামতকর্মী একবারও দরজা খুলে না দেখেই লিফটটি বন্ধ করে রেখে যায়। তারপর এক মাসে আর একবারের জন্যও পরীক্ষা করে দেখতে আসেনি লিফটিকে। পুরোটা সময় ’উ আটকে ছিলেন সেখানে।
চীনের গণমাধ্যম বেইজিং টাইমসকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই নারী সম্ভবত না খেতে পেয়ে মারা যান।
আবাসিক ভবনটিতে লিফট রয়েছে দু’টি। একটি লিফটের ছেঁড়া কেবল মেরামতের জন্য দু’জন মেরামতকর্মীকে ডাকা হয়। তারা ৩০ জানুয়ারি লিফটটি দেখতে এসে না শুধু দরজায় ধাক্কা দিয়ে দেখে ভেতরে কেউ আছে কিনা। কোনো সাড়া না পেয়ে লিফটের পাওয়ার বন্ধ করে তারা ভবনের সবাইকে দ্বিতীয় লিফট ব্যবহারের কথা বলে চলে যায়।
কিন্তু তখন লিফটের ভেতর ছিলেন ৪৩ বছর বয়সী ’উ। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়ায় লিফটটি তাকে নিয়েই ১০ এবং ১১ তলার মাঝখানে আটকে যায়। এর এক মাস পর গত সপ্তাহে ওই দুই মেরামতকারী কেবল ঠিক করতে আবারো এসে লিফটের দরজা খুলে মৃতদেহটি আবিষ্কার করে।
ভবনের অধিবাসীরা জানায়, মৃতদেহের হাত রক্তাক্ত এবং লিফটের ভেতরের দেয়ালে আঁচড়ের চিহ্ন ছিলো। তবে বন্ধ অবস্থায় লিফটের ভেতর থেকে কোনো অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পায়নি বলেও জানায় তারা।
’উ ওই ভবনে একা একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হতো না বললেই চলে। তাই টানা এক মাসেরও বেশি সময় তিনি বাড়িতে না থাকলেও কেউ টের না পায়নি।
ওই ঘটনায় ওই দুই মেরামতকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
লিফটে এভাবে মৃতদেহ আবিষ্কারের পর চীনে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে আবারো প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল সমালোচনা। গত বছরও চীনের জিংঝাউ এলাকার একটি শপিং মলে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট এসকেলেটরে পড়ে গিয়ে এক নারী মারা যান।
এসব ঘটনার পেছনে কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অবহেলাকে পুরোপুরি দায়ী করছে দেশটির জনগণ।