লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ এবং পার্লামেন্ট ভবনের সামনে হামলাকারী খালিদ মাসুদ একাই হামলা করেছিল। পরবর্তীতে তার অন্য কোনো হামলার পরিকল্পনা ছিল না বলে জানিয়েছে লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পুলিশের সহকারি উপ-কমিশনার নেইল বাসু বলেছেন: আমাদের সবার এ বিষয়টি মানতে হবে যে হামলাকারী কেন এই কাজ করল সে বিষয়টি সবসময় দুর্বোধ্য থেকে যাবে এমন সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশকে ছুড়ি মেরে হত্যার আগে ওই হামলাকারী গাড়িতে পিষে চারজনকে মারে এবং এতে ৫০জন হয়। মাত্র এক মিনিট ২২ সেকেন্ডের মধ্যে এই হামলার ঘটনা শেষ হয়। খালিদ মাসুদ একাই হামলা করেছিল।
তিনি আরো বলেন: যদিও সে একাই এ হামলায় অংশ নেয়, তবুও নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদেরকে জবাব দিতে আমরা সঠিক ও স্পষ্টভাবে হামলাকারীর এই অবর্ণনীয় কাজের কারণ খুঁজে বের করবো। কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা ব্যক্তির প্রোপাগান্ডায় অনুপ্রাণিত হয়ে মাসুদ এই হামলা চালিয়েছিলো কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।যারা মাসুদের সাথে পরিচিত সবাইকে পুলিশের সাথে কথা বলতে তাগিদ দেন তিনি।
এর আগে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারি উপ-কমিশনার মার্ক রাউলি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, সন্ত্রাসী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে খালিদ মাসুদ হামলাটি একা চালিয়েছে, নাকি অন্য কেউ তাকে উৎসাহ, সমর্থন বা নির্দেশনা দিয়েছে সেটা জানতে তদন্ত করছে পুলিশ। হয়তো এমন অনেকে আছেন, যারা আগে থেকেই মাসুদকে নিয়ে চিন্তায় ছিলেন, কিন্তু কোনো না কোনো কারণে হয়তো আমাদেরকে সে সম্পর্কে আগে বলতে পারেননি।’
লন্ডন পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে ও ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে গাড়ি নিয়ে চালানো ওই হামলার ঘটনায় গ্রেফতার করা মোট ১১ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৭ জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, ছেড়ে দেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আর কোনো পুলিশি কার্যক্রম হবে না।
ছেড়ে দেয়া ৭ জনের মধ্যে ৬ জনকে হকলি ও বার্মিংহাম থেকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়। আরেকজনকে ম্যানচেস্টার থেকে আটক করা হয়।
গত বুধবার দুপুরের পর ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনের কাছে ছুরিকাঘাত ও ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে গাড়ি চাপা দিয়ে হামলায় পুলিশসহ ৫ জন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ৪০ জন। পুলিশের গুলিতে হামলাকারীও নিহত হয়।
হামলার শুরুটা লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে। শহরের ব্যস্ততম ব্রিজটিতে সাধারণ মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দেয় হামলাকারী। হতাহতরা রাস্তায় পড়ে থাকার মাঝেই ব্রিজ থেকে নেমে মোড় ঘুরে পার্লামেন্ট ভবনের দিকে যায় গাড়িটি।
পার্লামেন্ট গেটের নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যরা তাকে থামাতে গেলে হামলাকারী গাড়ি থেকে নেমে তাদের ছুরিকাঘাত করে। পরে অস্ত্রধারী পার্লামেন্ট ভবনের দিকে দৌড়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
বুধবারের ওই হামলায় ৫ জন নিহত হওয়া ছাড়াও ৫০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে ৩১ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দু’জনের অবস্থা গুরুতর আর একজনের দেহে প্রাণঘাতী আঘাত রয়েছে।