করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রায় বিশ দিন লকডাউন চলছে। প্রথম দফায় ৫ এপ্রিল থেকে ছিল লকডাউন, ১৪ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফায় সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা আসে। সেই লকডাউন এখনও চলমান। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন: চলমান লকডাউনের পর জনস্বার্থ বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকার শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর চিন্তাভাবনা করছে।
করোনাভাইরাস এমনই এক পরিস্থিতি দাঁড় করিয়েছে যে, একদিকে লকডাউনের বিকল্প নেই; আবার অন্যদিকে জনস্বার্থ বিবেচনারও দাবি রাখে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দিক চিন্তা করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া আসলে উপায়ও নেই। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসা বাণিজ্যসহ নানা খাত চাঙ্গা হয়। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও সব খাত মৃতপ্রায়।
এসব বিবেচনায় লকডাউন কিছুটা শিথিল হলেও শঙ্কা থেকে যায়। কারণ, আমরা সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেও অসচেনতার জয়জয়কার দেখেছি। স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার যেন প্রতিযোগিতা চলেছে দেশের অনেক জায়গায়। এছাড়া গণপরিবহন চালু হলেও সেখানে যে স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।
এ বিষয়টি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী খুব ভালোভাবেই জানেন। এজন্যই তিনি বলেছেন: ‘লকডাউন শিথিল হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।’ ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যে আমরা আশাবাদী হতে চাই। স্বাস্থ্যবিধি ও এ সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলা নিশ্চিত হবে বলেই আমরা আশা করি।
ইউরোপ-আমেরিকার কথা আমরা প্রায় সবাই জানি। উন্নত সেসব দেশও করোনার হানায় নাস্তানাবুদ। এমনকি আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতও নাজুক অবস্থায় রয়েছে। সেখানকার অবস্থা এমন যে, অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতালে চিকিৎসকদের চোখের সামনে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে, কিন্তু তারা কিছুই করতে পারছে না। আমরা যদি সেই অবস্থায় যেতে না চাই তাহলে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে। এজন্য মাস্ক পরা, বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।