রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে মিয়ানমারে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’কেও রোহিঙ্গাদের জন্য কথা বলার আহ্বান জানান মালালা।
বিবিসিকে তিনি বলেন, আমরা এখন চুপ করে থাকতে পারি না। কেননা সেখানে ঘরহারা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। নাগরিকত্ব নেই, রাষ্ট্রে বসবাসের অধিকার নেই এমন পরিস্থিতি এক মুহূর্তের জন্যও চিন্তা করা যায় না।
এমন ঘটনাকে মানবাধিকার ইস্যু উল্লেখ করে মালালা বলেন, সরকারগুলোর উচিত এসবের বিরোধিতা করা, কেননা সেখান থেকে মানুষ বিতারিত হচ্ছে, সহিংসতার শিকার হচ্ছে। শিশুরা পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে না, তারা তাদের মৌলিক অধিকারও পাচ্ছে না। এমন সহিংস পরিবেশের মধ্যে বেড়ে উঠাও খুব কঠিন।
পাকিস্তানি এই নোবেলজয়ী সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের জেগে উঠা ও প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত, আমি আশা করি অং সান সু চিও এই ব্যাপারে তার প্রতিক্রিয়া দেখাবেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
সেনাবাহিনীর ওই হামলায় এখনও পর্যন্ত ৪শ’র বেশি মানুষ মারা গেছে, আর প্রাণভয়ে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে। এছাড়া নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতে মারা গেছে শতাধিক রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।