২১ বছর বয়সী রোহিঙ্গা শরণার্থী মিনিরা তার দেড় বছর বয়সের মেয়ে আসমাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার জন্য বালুখালি আশ্রয় শিবিরে নিয়ে এসেছেন। আসমার শরীরের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। পুষ্টিহীনতাসহ নানারকম শারীরিক জটিলায় ভুগছে আসমা।
পরীক্ষা করার পর আসমার মধ্যে মারাত্মক তীব্র অপুষ্টির লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন সেবাদানকারী কর্মকর্তারা। যথাযথ পথ্য ও সম্পূরক পুষ্টি দিয়ে চারদিন পর আবার দেখা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শুধু মিনিরার মেয়ে আসমা একা নন, তার মতো লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এখন পুষ্টির জন্য লড়াই করছেন। সন্তানদের পুষ্টির ঘাটতির পাশাপাশি নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাদের।
এই অবস্থায় সবাইকে জরুরি সেবা দিতে ‘মারাত্মক অপুষ্টি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র’ খোলা হয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের সহায়তায়। সেখানেই সন্তানের জন্য সেবা নিতে এসেছিলেন মিনিরা। আসমার মতো শিশুদের নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মা আসছেন এই কেন্দ্রটিতে। কেন্দ্রটি থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ৫০ জনের বেশি রোহিঙ্গা শিশুকে স্বাস্থ্য ও জরুরি পুষ্টি সেবা দিয়ে যাচ্ছে তারা।
এসময় মিনিরা বলেন, ‘আমি আমার মেয়ের স্বাস্থ্য নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। সে ধীরে ধীরে একদম নির্জীব হয়ে পড়ছে। কী করা উচিত বুঝতে না পেরে শেষে এক প্রতিবেশীর পরামর্শে মেয়েকে এখানে নিয়ে এসেছি।’
সেবাদানকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী চার দিনে আসমার অবস্থার উন্নতি না হলে আমরা হয়তো তাকে আইওএম ক্লিনিকে রেফার করবো।’
এরই মধ্যে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও উখিয়ায় এসেছে প্রায় ৮ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা প্রায় দুই লাখের বেশি। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা মোট রোহিঙ্গার ৬০ শতাংশ।
শারীরিক ও মানকিভাবে বিপর্যস্ত বিপুল এই রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সেবা নিশ্চিতের আহ্বান জানায় জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক বিশেষ সংস্থা ইউনিসেফ। এসব শিশুদের জীবন বাঁচাতে জরুরি সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি কিছু জরুরি নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করে সংস্থাটি।
বিশেষ করে পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শিশুদের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার কথা উল্লেখ করেছে তারা।