এরই মধ্যে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে কক্সবাজার ও উখিয়ায়। বিভিন্ন সময়ে এসব রোহিঙ্গাদের জন্য এসেছে ত্রাণ সহায়তাও। পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গার মধ্যে যেমন শিশুরা আছে তেমন আছে বৃদ্ধরাও।
খাবারের সংকটে তো ভুগছেই সঙ্গে বিপদ হিসেবে আছে নানান অজানা রোগের প্রাদুর্ভাব। সেসব মিলিয়ে খুবই মানবেতর অবস্থার মধ্যে বসবাস করছে রোহিঙ্গারা। তাদের জন্যই বিভিন্ন দেশ বাড়িয়ে দিচ্ছে সহায়তার আশ্বাস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে ত্রাণ সহায়তা।
তুরস্ক: এরই মধ্যে তুরস্ক সরকারের পাঠানো এক হাজার টন ত্রাণ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের দেখে বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ১০ হাজার টন ত্রাণ পাঠানোর কথা রয়েছে তুরস্কর।
ডেনমার্ক: মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা দিতে ডেনমার্ক সরকার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)-কে ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ডব্লিউএফপি ও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর মাধ্যমে ডেনিস ত্রাণ সহায়তা শরণার্থীদের কাছে পৌঁছাবে।
মালয়েশিয়া: মিয়ানমার থেকে নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে দেড়শ পরিবারের হাতে মালয়েশিয়ার ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য ১২ টন ত্রাণ পাঠায় মালয়েশিয়া সরকার। একটি সামরিক উড়োজাহাজে করে তারা ত্রাণ নিয়ে আসে বাংলাদেশে।
ইরান: বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য কার্গো বিমানে করে ত্রাণ পাঠানোর কথা রয়েছে ইরানের। ইরানি কার্গো বিমান অবতরণের অনুমতি চেয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছে ইরান, যা খুব শিগগিরই অনুমতি মিলবে বলে ঢাকায় ইরান দূতাবাস জানিয়েছে। ইরানি ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে শুকনো খাবার, ওষুধ ও কাপড় থাকছে।
আজারবাইজান: সেনা অভিযানের মুখে প্রাণের ভয়ে মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে আজারবাইজান সরকার। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা লাখ লাখ সহায় সম্বলহীন বিপন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে জরুরি ভিত্তিতে ১০০ টন খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়েছে আজারবাইজান। ত্রাণ নিয়ে শনিবার আজারবাইজান থেকে সিল্ক ওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের বিশেষ কার্গো বিমানে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা হিসেবে পাঠানো প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের এসব খাদ্য সামগ্রী কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এসব খাদ্য সামগ্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
অস্ট্রেলিয়া: এছাড়া ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর কথা রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অস্ট্রেলিয়ার। সঙ্কট মোকাবেলায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ত্রাণ সহযোগিতা অস্ট্রেলিয়া দেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়া বিশপ।
কানাডা: সেনা অভিযানের মুখে রাখাইন থেকে উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কানাডা ফেডারেল সরকার। উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ১ মিলিয়ন ডলার দেবে দেশটি।