মামলায় জিতে দুই বছর আগের এক প্রতিবেদন আবারও আলোতে আনার অনুমতি পাচ্ছে জার্মান ম্যাগাজিন ডের স্পেগেল। ধারণা করা হচ্ছে, এ প্রতিবেদন নতুন করে প্রকাশ হলে আবারও বিপাকে পড়তে পারেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কী ছিল সেই প্রতিবেদনে? কেন বিপাকে পড়বেন পর্তুগিজ মহাতারকা?
২০১৬ সালে ডের স্পেগেল তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, নিজ নামের স্বত্ব ব্যবহার করে সুইজারল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে অখ্যাত প্রতিষ্ঠানে প্রচুর অর্থ ঢেলেছেন রোনালদো। ম্যাগাজিনটির দাবি অনুযায়ী ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে এদুই দেশে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো পাচার করেছেন পাঁচবার ব্যালন ডি’অর জয়ী ফুটবলার!
ডের স্পেগেলের সেই প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলার সময় ভার্জিন আইল্যান্ডসের ‘টোলিন’ নামের অখ্যাত প্রতিষ্ঠানে ৭৪.৮ মিলিয়ন ঢেলেছেন রোনালদো। দুই দেশ মিলিয়ে অর্থের পরিমাণটা ১৫০ মিলিয়ন।
অথচ বিপুল পরিমাণ অর্থ অন্য দেশে বিনিয়োগ করে স্পেনে নামে মাত্র ট্যাক্স দেন রোনালদো। প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্যাক্সের পরিমাণটা ছিল ৫.৬ মিলিয়ন ইউরো যা মোট অর্থের মাত্র চার শতাংশ। নিজের নামের স্বত্ব খাঁটিয়ে ৩১ মিলিয়ন ইউরো ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ ডের স্পেগেল তুলেছিল রোনালদোর বিরুদ্ধে।
কেবল রোনালদোই নন, ডের স্পেগেল অভিযোগের আঙুল তুলেছিল হোসে মরিনহোর দিকেও। রিয়ালের কোচ থাকার সময় স্প্যানিশ কর কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভার্জিন আইল্যান্ডসের মালিকানাধীন এক প্রতিষ্ঠানের সুইস অ্যাকাউন্টে ১২ মিলিয়ন ইউরো পাচার করেন পর্তুগিজ কোচ, নিজেদের প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি ছিল জার্মান ম্যাগাজিনটির।
প্রতিবেদনটি প্রকাশে ডের স্পেগেলকে সাহায্য করেছে ফুটবল লিকস। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ৬০ সাংবাদিকের পরিশ্রমও জড়িয়ে আছে এরসঙ্গে। ফুটবল লিকসের দাবি অনুযায়ী, স্পন্সরশীপ থেকে পাওয়া ১৮৫ মিলিয়ন ইউরো আয়ারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, পানামা ও সুইজারল্যান্ডে পাচার করেছেন রোনালদো।
তখন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন রোনালদো ও মরিনহো। রোনালদোর দাবি ছিল, ‘তার এজেন্ট হোর্হে মেন্ডেজের তৈরিকৃত ব্যবসার লভ্যাংশই বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।’
ডের স্পেগেলের প্রতিবেদনটি নিয়ে শেষপর্যন্ত আদালতে দ্বারস্থ হন রোনালদো। দুই বছর চলার পর গত মঙ্গলবার ডের স্পেগেলের পক্ষেই রায় দিয়েছেন জার্মানির হ্যামবুর্গ আদালত। ফলে নতুন করে প্রতিবেদন প্রকাশে আর বাধা থাকছে না ম্যাগাজিনটির। আর এই প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আবারও নতুন করে করের ঝামেলায় পড়তে পারেন সিআর সেভেনে। গত জানুয়ারিতে বিশাল অঙ্কের জরিমানা দিয়ে জেল এড়ালেও নতুন মামলায় ভাগ্য নাও পাশে থাকতে পারে তার!