২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেকের পর ২০১৫ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত ১১০টি ওয়ানডে খেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেঞ্চুরি ছিল না একটিও। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে যোগ দেওয়ার পরই এই অলরাউন্ডারের ভাগ্য বদলের শুরু। রিয়াদ সোমবার জানালেন, তার উন্নতির পেছনে সদ্য পদত্যাগী কোচের অনেক অবদান ছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সাহায্য সংস্থা ইউএসএইডের (USAID) শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তি সই করার পর সংবাদ মাধ্যমকে রিয়াদ বলেন, ‘আমার উন্নতির পেছনে উনার (হাথুরুসিংহে) বেশ অবদান ছিল। অবশ্যই ওনাকে মিস করবো।’
বিশ্বকাপ থেকেই অন্য এক রিয়াদের দেখা মেলে। দুই ম্যাচে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ক্রিকেটের সেরা আসরে বাংলাদেশের সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপই শুধু দূর করেননি, নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এরপর টানা পারফর্ম করে যাচ্ছেন।
সাউথ আফ্রিকা সিরিজের পর হঠাৎ কোচের পদত্যাগের কারণ হিসেবে অনেকে জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে দূরত্বের ব্যাপারটি মিডিয়ায় আসে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও এমন ইঙ্গিত দেন। তবে মাহমুদউল্লাহ জানালেন কোচের অধীনে একটা পরিবারের মতোই ছিলেন তারা।
‘আমাদের কারও সঙ্গেই কোচের কোনো ঝামেলা ছিল না। এই ব্যাপারটায় আমি দ্বিমত পোষণ করছি। সম্পর্ক সবসময় ভাল ছিল। কারণ ফ্যামিলির মতো ছিলাম। অনেক সময় অনেক কিছুই শোনা যায়।’
সোমবার গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে প্রথম বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদ হিসেবে ইউএসএআইডি’র (USAID) শুভেচ্ছাদূত হিসেবে এক বছরের চুক্তিতে সই করেন রিয়াদ।
সংস্থাটির বাংলাদেশ মিশন প্রধান জেনিনা জারুজেলস্কি বলেন, ‘আমরা জানি বাংলাদেশের উন্নয়নের সম্মুখভাগে যুব সমাজকে নিয়ে আসতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আমাদের সাথে থাকবেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে যুব সমাজকে কাজে লাগাতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমাদের অনেক উদ্যোগে মাহমুদল্লাহ একজন জাতীয় অনুপ্রেরণা ও আন্তর্জাতিক বিজেতা হিসেবে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হবেন। আমরা তাকে পেয়ে খুব আনন্দিত।’
শুভেচ্ছাদূতের বক্তব্যে মাহমুদউল্লাহ বলেন,‘ এদেশের ভবিষ্যৎ গড়তে ও সমাজকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা যে যুবসমাজের রয়েছে তা তরুণদের বোঝাতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। এজন্য ইউএসএআইডি’র এই অংশিদারিত্ব করা এবং শুভেচ্ছাদূত হওয়াতে আমি গর্বিত বোধ করছি। আমরা শুধু ক্রিকেট খেলায় নয় অনেক কিছুতেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মেয়েরা এফসি ফুটবলে খুব ভাল করছে।’
সবার জন্য টেকসই শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, পুষ্টি নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করবেন মাহমুদউল্লাহ। সমাজের সার্বিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কাজ করবেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ও টানা দুই সেঞ্চুরিয়ান।