জাতিসংঘের সংস্কার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বির্তক চলছিল। বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে। কারণ নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা বর্তমান বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করে না বলে অনেকেই মনে করেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে বির্তক আরো তীব্র হয়ে উঠেছে।
এনডিটিভি জানায়, গত মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধে নিষ্ক্রিয়তার জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে তিরস্কার করেন।
নিরাপত্তা পরিষদ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে আহবান জানিয়ে জেলেনস্কি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনারা কি জাতিসংঘ বন্ধ করতে প্রস্তুত?’
‘‘আপনারা কি মনে করেন আন্তর্জাতিক আইন উঠে গেছে? যদি আপনাদের উত্তর ‘না’ হয়, তাহলে আপনাদের অবিলম্বে কাজ করতে হবে। অবিলম্বে জাতিসংঘের সনদ পুনরুদ্ধার করতে হবে।’’
নিরাপত্তা পরিষদ তার দেশের নৃশংস আগ্রাসন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পর, জেলেনস্কি জাপানি আইন প্রণেতাদের কাছে বলেছেন, ‘আমাদের একটি নতুন হাতিয়ার তৈরি করতে হবে।’
১৯৪৫ সালে বিশ্ব শান্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রতিরোধের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গঠন করা হয়েছিল জাতিসংঘ।
সংস্থাটি নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী ভেটো-চালিত সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সকে অসম ক্ষমতা প্রদান করেছে। এর ফলে এই পাঁচ দেশ নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ এবং বিশ্বের যেকোন দেশের ক্ষেত্রেও তারা তাদের অবস্থান জোরালো ভাবে জানান দিতে পারে এর মাধ্যমে।
এইভাবে ২০১১ সাল থেকে রাশিয়া তার মিত্র সিরিয়ার বিষয়ে ভোটে প্রায় ১৫ বার নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো প্রয়োগ করেছে।
কিন্তু ভেটো ক্ষমতা এটাও প্রতিশ্রুতি দেয় যে মস্কোকে কখনোই কাউন্সিল থেকে সরানো যাবে না, যেহেতু জাতিসংঘের সনদের ৬ নং অনুচ্ছেদ সাধারণ পরিষদকে নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশের ভিত্তিতে শুধুমাত্র একজন সদস্যকে বাদ দেওয়ার অনুমতি দেয়।
সে প্রেক্ষিতে বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন ২০০৩ সালে জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়াই ইরাকে আক্রমণ করেছিল। এবং তাদের এ ধরনের কাজের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যপদ ও বাতিল হয়নি।