চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাবি’র নিয়োগ পরীক্ষা ভণ্ডুল: ক্ষমতাসীন দলের এ কেমন আচরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। দৈনিক জনকণ্ঠ, প্রথম আলোসহ কয়েকটি পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিন ক্যাটাগরিতে ২৭ পদের বিপরীতে আবেদন করা তিন হাজার ২২০ জন প্রার্থী গতকাল শুক্রবার নির্ধারিত দিনে পরীক্ষা দিতে আসেন। কিন্তু তাদেরকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। আর ক্যাম্পাসের প্রবেশপথগুলোতে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচির নামে চাকরিপ্রার্থীদের হয়রানি ও লাঞ্ছিত করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করতে রাজি না হওয়ায় আগের দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও আইসিটি সেন্টারের প্রশাসককে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এ ঘটনার ঠিক একদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের মালি ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষার সাক্ষাতকার বন্ধ করে দেয়  মতিহার থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দুইটি ক্ষেত্রেই তারা নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে নিজেদের দলীয় প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়ার দাবি করে। এমন ঘটনা এই প্রথম নয়, অসংখ্যবার ঘটেছে। আর এসব ঘটনার বেশিরভাগের সঙ্গেই জড়িত থেকেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। ২০১০ সালে ওই সময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর জেলা পাবনায় এমন একটি ঘটনা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেদিন পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা ভণ্ডুল করে দিয়েছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, তাদের হামলায় আহত হন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এমন হামলার পর সরকারি দলের নেতাকর্মীদের তাণ্ডবের কথা তুলে ধরে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে কেঁদে ফেলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। কিন্তু সেই ঘটনার কি বিচার হয়েছে? না হয়নি। উল্টো ১০ দিনের মধেই পাবনা ছাড়তে হয়েছিল জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও জামিন নিয়ে তারা বেরিয়ে যায়। ঘটনাকে মিডিয়ার সৃষ্টি বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রভাবশালী উপদেষ্টা। এমন খারাপ অভিজ্ঞতার পরও আমরা চাই রাজশাহীর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। ক্ষমতাসীন দল করাই বড় যোগ্যতা, অন্য কোনো যোগ্যতা না থাকলেও চলবে; এমন মনোভাবকে আমরা স্বৈরাচারী আচরণের সঙ্গেই তুলনা করতে পারি। আর এসব ঘটনার বিচার না হলে বারবার  তা ঘটতেই থাকে। পাবনার সেই ঘটনা তার জলজ্যান্ত উদাহরণ।