রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি আলী ইউনুস হৃদয়ের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুল জামিল সুস্ময়ের বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে সাংবাদিকরা। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি করেন তারা।
রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ’ ও ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে রাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সিরাজুস সালেকীন বলেন: শাবিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি, বেরোবিতে হামলা, জাবিতে হামলা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা এসব ঘটনায় জড়িত কারা? যখনই আমরা এসব দেখতে যাই বারবার একই নাম ফিরে আসে, তা হল ছাত্রলীগ। একটা কথা বলতে লজ্জা লাগছে, বঙ্গবন্ধু আদর্শে গড়া এই প্রতিষ্ঠানটার অবস্থা কী! যথাযথ ব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে তারা (ছাত্রলীগ) বারবার এ ধরণের হামলা চালাচ্ছে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তিনি ছাত্রলীগের সকল ধরণের ইতিবাচক নিউজ বর্জনের ঘোষণা দেন।
এ সময় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোল্লা মোহম্মদ সাইদ বলেন: আমাদের বাবা-মা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু এখানে আমাদের জীবনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নাই, সেখানে কী করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করবো? যেখানে আমাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে, সেখানে মারধরের শিকার হতে হচ্ছে। আর এই মারধরের পিছনে নামধারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই জড়িত। তারাই কি আমাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছেন? তাহলে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কি দরকার। এসময় তিনি তার সহপাঠি আলী ইউনুস হৃদয়ের ওপর এ ধরনের হামলার বিচারের দাবি করেন।
মানববন্ধনে রাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মানিক রাইহান বাপ্পির সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, রাবি রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি শিহাবুল ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সভাপতি রবিউল ইসলাম তুষার, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জাহিদ, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা নুর, প্রচার সম্পাদক আহমেদ ফরিদ ও সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য শাকিলা খাতুন।
এসময় রাবি প্রগতিশীল ছাত্রজোট একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সংবাদিকদের আয়োজিত মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এদিকে রাবির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট হামলার ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায়।
ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগের দাবি জানিয়ে মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাবির কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ১ থেকে ৬ ডিসেম্বর জাজ মাল্টিমিডিয়া ‘দহন’ সিনেমাটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রথম দিন প্রদর্শনী শুরুর আগ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেখানে জড়ো হয়ে প্রদর্শনীর প্রতিবাদ জানালে প্রক্টরের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে।
এসময় দৈনিক খোলা কাগজের রাবি প্রতিনিধি আলী ইউনুসের ওপর হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবরুন জামিল সুস্ময়।