চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যেভাবে হয়ে ওঠেন কণ্ঠের যাদুকর

লোকগানের শুয়াচান পাখি ও প্রখ্যাত বংশীবাদক আব্দুল বারী সিদ্দিকী। লোকসঙ্গীতের অপার ভাণ্ডারে একখণ্ড হীরকের মতো জ্বলজ্বলে তিনি লাখো শ্রোতার মনিকোঠায়। ইমপ্রেসের মাধ্যমে প্রথম তার কণ্ঠের যাদুর কথা জেনেছিলো মানুষ, শেষ অনুষ্ঠানও করেছেন চ্যানেল আইয়ে।

ইমপ্রেসের অনুষ্ঠান রঙের বাড়ই। ১৯৯৫ সালে আসাদুজ্জামান নূরের উপস্থাপনা আর নন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে বংশীবাদক বারী সিদ্দিকীকে প্রথমবারের মতো জাদুকরী কণ্ঠের লোকশিল্পী হিসেবে চিনলো দেশ। তার কণ্ঠের যাদুর শেষ অনুষ্ঠান ছিলো চ্যানেল আইয়ের পর্দায়, গত ১২ নভেম্বর।

বরেণ্য সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব বারী সিদ্দিকীর জন্ম ১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনায়। গুনী এই সঙ্গীতজ্ঞের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছোটবেলা থেকেই। ধ্রুপদ সঙ্গীতে তালিম নেয়া শুরু মাত্র ১২ বছর বয়সে। তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ গোপাল দত্ত, ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষসহ অনেক গুণীশিল্পীর সান্নিধ্যে থেকে।

তার কণ্ঠের মোহনীয়তা আর বাঁশির সুরের মূর্চ্ছনা আবিষ্ট করে রাখতো শ্রোতাদের। জীবন-মৃত্যুর অনিবার্যতাও বারবারই ধরা দিয়েছে এ সঙ্গীতজ্ঞের কণ্ঠে।

’৯০ দশকে ভারতের পুনেতে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন বারী সিদ্দিকী। দেশে ফিরে লোকগীতির সঙ্গে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সম্মিলনে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি।

তবে, সংগীত শিল্পী হিসেবে পুরো দেশের কাছে তার পরিচিতি ইমপ্রেসের ওই ‘রঙের বাড়ই’ অনুষ্ঠান থেকে। হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে তার নাম উচ্চারিত হয়েছে বারবার।

১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় নির্মিত ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ৭টি গানে কণ্ঠ দেন গুণী এই শিল্পী। তুমুল জনপ্রিয়তা পায় গানগুলো। একই বছর জেনেভায় বিশ্ব বাঁশি সম্মেলনে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন তিনি।

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে ১২ই নভেম্বর চ্যানেল আইয়ের ‘আমার যতো গান’ অনুষ্ঠানে শেষবারের মতো পর্দায় হাজির হয়েছিলেন বরেণ্য এ শিল্পী।

গানের সুয়াচান পাখি বারী সিদ্দিকী আছেন, থাকবেন বাঁশির সুরের মায়ায় আর বাংলা ভাষাভাষি দর্শক শ্রোতার ভালোবাসায়।